কিভাবে একজন সফল ইউটিউবার YouTuber হওয়া যায়, আমাদের তো অনেকেরই সপ্ন থাকে একজন সফল ইউটিউবার হওয়ার। বর্তমানে একজন ইউটিবার নিজের ইউটিউব চ্যানেল কে কাজে লাগিয়ে নিজের ক্যারিয়ার কে অনেকটা গ্রো করে নিয়ে যাচ্ছে।
উনাদের মাসিক ইনকাম একজন সরকারি বা বেসরকারি চাকরিজীবীর চেয়েও ভালো। তাই আমাদের মনেও ইচ্ছা জাগে যে আমিও যদি একজন সফল ইউটিউবার হতে পারতাম।
আজকের এই আর্টিকেলটি সাজিয়েছি ইউটিউবার হওয়ার কিছু উপায় সম্পর্কে। জানতে আগ্রহী হলে অবশ্যই পুরো পোস্ট টি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
আমরা মনে করি একটি ইউটিউ চ্যানেল খুলে সেখানে কয়েক টা ভিডিও আপলোড করলেই আমরা সেখান থেকে ইনকাম করতে পারবো। বিষয়টা কিন্তু তা না।
ইউটিউবে সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য্য ধরে ইউটিউবের পেছনে সময় ব্যায় করতে হবে। একজন ইউটিবার এমনিতেই কিন্তু একদিনে সফল হয়ে ওঠে নি।
তাকে মাসের পর মাস ধৈর্য্য সহকারে কষ্ট করে কাজ করতে হয়েছে। এখন আপনি যদি চ্যানেল খুলেই সফলতার চিন্তা করেন। তাহলে সেটা হলো আপনার ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখার মতো।
তাহলে এখন আর কথা না বাড়িয়ে একজন সফল ইউটিউবার হওয়ার উপায় জেনে নেওয়া যাক।
কিভাবে একজন ইউটিবার হবো।
আমরা যখন একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সেখানে ভিডিও আপলোড দেয়। তখনি আমাদের একটা সপ্ন থাকে সফল ইউটিউবার হওয়া। যারা ধৈর্য্য সহকারে অনেক পরিশ্রম করতে পারে তারা অল্প সময়ের মধ্যেই সফল হতে পারে। আপনিও যদি একজন ইউটিবার হতে চান তাহলে নিচের স্টেপ গুলো ফলো করতে পারেন।
১.লক্ষ্য ঠিক করুন(set your goals):
জীবনে আপনি যা কিছুই হতে চান না কেন তার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। তো এখন আপনি একজন সফল ইউটিউবার হতে চাইলে ও আপনাকে একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।
আপনি কিভাবে কতটুকু পরিশ্রম করবেন। কতদিনে আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন তার একটি target আপনাকে অবশ্যই আগে করে নিতে হবে। তারপর আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য মত পরিশ্রম করার দরকার তাই করবেন।
আমরা অনেকেই সপ্ন দেখি যে আমি এটা হবো ওটা হবো। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষই ব্যার্থ হয়। এর কারন হলো আমরা আমাদের লক্ষ্যটাকে সপ্ন হিসাবে দেখি। কিন্তু আমাদের উচিত আমাদের সপ্ন টাকে লক্ষ্য বানানো।
তাই আমার মনে হয় সফলতা পাওয়ার আগে অবশ্যই আমাদের নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য (goals)সেট করে নিতে হবে।
২. প্রয়োজনীয় ও সঠিক ভিডিও তৈরি করুন:
আপনাকে এমন ভিডিও তৈরি করতে হবে যেগুলো দেখার অনেক চাহিদা রয়েছে। যে বিষয়ে লোকেরা বেশি সার্চ করে সেসকল ভিডিও তৈরি করতে।
এখন আপনি এমন সব ভিডিও তৈরি করলেন যেগুলো মানুষের কাছে ভালো লাগে না তাহলে কিন্তু আপনার ভিডিও কেউ দেখবে না। আর আপনি সফলও হতে পারবেন না।
আপনাকে এমনসব ভিডিও তৈরি করতে হবে যেগুলো মানুষ দেখতে আগ্রহী কিন্তু এর কম্পিটিশন কম । আপনি যদি বেশি চাহিদার কম কম্পিটিশনের ভিডিও তৈরি করেন তাহলে খুব সহজেই success হতে পারবেন।
৩. তথ্য বহুল ভিডিও তৈরি করুণ:
আপনি যে বিষয় নিয়েই ভিডিও তৈরি করেন না কেন আপনাকে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে ভিওয়ার্স যেন আপনার দেওয়া ভিডিও থেকে সে বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
যদি আপনি প্রয়োজনীয় এবং তথ্য বহুল ভিডিও তৈরি করেন তাহলে একজন খুব সহজেই আপনার ভিডিও টা দেখে সে বিষয়ে বুঝতে পারবে। এতে করে আপনর ভিডিওর ভিউ বাড়বে এবং সেই সাথে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।
সবসময় আপনি চেষ্টা করবেন ভিডিও থেকে যেন একজন A to z পর্যন্ত জানতে পারে। এতে করে সকলেই আপনার ভিডিও সম্পূর্ণ ভাবে দেখবে। আর তাই ভিডিওর সার্চে আপনার ভিডিও থাকার সম্ভাবনা থাকবে।
কারন যে ভিডিওতে সব কিছু ভালো করে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয় সে ভিডিও গুলো ইউটিউব সার্চের প্রথম পাতায় শো করে।
৪. ভিডিওতে SEO করা:
আমরাতো সকলেই জানি SEO মানে কি। SEO হলো search engine optimization.আপনি যদি আপনার প্রত্যেকটা ভিডিও তে ভালো করে Seo করেন তাহলে খুব সহজেই আপনার ভিডিও গুলো ইউটিউবে Rank করবে।
এতে করে আপনি খুব সহজেই সার্চ ইঞ্জিন থেকে প্রচুর পরিমাণে ফ্রি ভিউয়ার পাবেন। আপনার ভিডিও মতো বেশি ভিউ হবে আপনার সফলতা ততো আপনার নিকটে আসবে।
তাই আপনাকে ভালো মানের ভিডিও তৈরির সাথে সাথে Seo এর দিকে খুবই যত্নশীল হতে হবে।
৫. চ্যানেলের বিষয় টপিক নিয়ে ভিডিও তৈরি করুন:
ভিডিও তৈরির সময় সবসময় চ্যানেলের বিষয় বা টপিক (nich) অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করবেন। এতে করে আপনার চ্যানেলের কাস্টমাইজ সুন্দর হবে। এবং আপনি যে টপিকের উপর চ্যানেল তৈরি করছেন তার ভিউয়ার্স এর সংখ্যাও বাড়বে।
আপনি যদি একটি টেকনোলজি বিষয়ক চ্যানেল তৈরি করেন তাহলে যারা টেকনোলজি পছন্দ করে তারা আপনার ভিডিও গুলো দেখবে এবং সাবস্ক্রাইব করবে।
এখন আপনি যদি এর মধ্যে অন্যান্য ভিডিও আপলোড করেন তাহলে তারা সে ভিডিও গুলো দেখবে না। ফলে আপনি আপনার আডিয়েন্স হারাবেন।
তাই চেষ্টা করবেন সেখানে টেকনোলজি বিষয়ক ভিডিও দেওয়ার জন্য। আপনি সবসময় আপনার চ্যানেলের টপিকের উপর ফোকাস করে ভিডিও দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
৬. নিয়মিত ভিডিও আপলোড:
আমরা যখন প্রথম একটি ইউটিউ চ্যানেল তৈরি করি তখন প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করি। কিন্তু কয়েকদিন যাওয়ার পর যখন দেখি ভিডিও বেশি ভিউ হয় না তখনই ভিডিও আপলোড বন্ধ করে দেয় ।
আমাদের একটা কথা মাথায় রাখতে হবে সফলতা এমনিতেই আসেনা এর জন্য অনেক কাজ করতে হবে এবং ধৈর্য ধরতে হবে।
ভিডিওতে ভিউ আসুক বা না আসুক আপনি আপনার চ্যানেলের টপিকের উপর প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করতে থাকেন। চেষ্টা করবেন ভালো কোয়ালিটির ভিডিও আপলোড করার জন্য।
যদি আপনার একটি ভিডিও ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি সেখান থেকেই ভালো কিছু পেতে পারেন। মনে রাখবেন একটি চ্যানেলকে উপরে তোলার জন্য একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়াই যথেষ্ট।
৭. ভিডিও এডিট:
আপনি ইউটিউবে তখনি সফল হতে পারবেন যখন আপনার তৈরি করা ভিডিও সবাই দেখে কোনো কিছু শিখতে পারবে বা আনন্দ পাবে। এবং আপনার ভিডিও গুলো সকলের কাছে ভালো লাগবে।
আপনাকে তাই আপনার তৈরিকৃত ভিডিও গুলো আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় করার জন্য প্রফেশনাল ভাবে এডিট করতে পারবে।আপনি যদি আপনার ভিডিও ভালোভাবে এডিট করে বিভিন্ন ইফেক্ট এবং স্মোথলি ও আকর্ষণীয় করতে পারেন তাহলে আপনার ভিডিও দেখে সকলেরই ভালো লাগবে। এতে করে খুব সহজেই আপনি ভালো ভিউয়ার্স এবং সাবস্ক্রাইবার পাবেন।
তাই আপনাকে বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করে ভিডিও এডিটিং এর দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
৮. কপিরাইট ফ্রি মিউজিক বা ইমেজ ব্যবহার:
একটি ভিডিও কে সুন্দর ও আরো আকর্ষণীয় করার জন্য ভিডিওতে অবশ্যই background music ব্যাবহার করা উচিত।
প্রত্যেক ইউটিউবারই তাদের ভিডিওতে বিভিন্ন ধরনের background music ব্যাবহার করে থাকে। এখন আপনি যদি আপনার ভিডিওতে যেকোনো ধরনের background music ব্যাবহার করেন
তাহলে আপনাকে অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আর তা হলো কপিরাইট স্ট্রাইক। আপনার চ্যানেলে যদি তিনটি কপিরাইট স্ট্রাইক আসে তাহলে
আপনার চ্যানেল ডিজেবল হয়ে যাবে। তাহলে আপনার সফল ইউটিউবার হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।
তাই আপনি যখন আপনার চ্যানেলে বিভিন্ন background music বা ইমেজ ব্যবহার করবেন তাহলে সেটা কপিরাইট কিনা তা দেখে নিবেন।
অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি বিনামূল্যে বা প্রিমিয়াম বিভিন্ন কপিরাইট ফ্রি মিউজিক বা ইমেজ করে ব্যাবহার করতে পারবেন।
এখনতো বুঝতেই পারছেন ভিডিওতে কপিরাইট ফ্রি মিউজিক বা ইমেজ ব্যবহার কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখন আপনাকে ভালো কোয়ালিটির ভিডিও তৈরির সাথে সাথে কপিরাইট ফ্রি background music বা ইমেজ ব্যবহারের দিকে অধিক খেয়াল রাখতে হবে।
শেষ কথা:
এই ছিল আজকের একজন ইউটিবার হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। একজন সফল ইউটিউবার হতে হলে আপনাকে নিয়মিত ইউটিব ভিডিও তৈরির পেছনে সময় ব্যায় করতে হবে।
শুরুতেই ইনকামের কথা চিন্তা করা যাবে না। প্রথমে প্রথমে আপনাকে বিনা লাভে কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে। মূল কথা হলো ইউটিউবে সফল হতে হলে আপনার অবশ্যই প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকতে হবে।
কখনোই হাল ছাড়া যাবে না। কোনো কাজে সফল হওয়ার জন্য ইচ্ছা শক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।