ইমেইল মার্কেটিং Email Marketing এমন একটি মার্কেটিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করা অনেক সহজ। তবে আপনি যদি ভালো ভাবে ইমেইল তৈরি করতে না পারেন তাহলে সেই পরিমান সাফল্য পাবেন না। আপনার যত ভালো ইমেইল লিস্ট থাকুক না কেন অবশ্যই ইমেইলটিতে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় থাকতে হবে। সেই বিষয়গুলো ছাড়া ইমেইলটি পরিপূর্ণ হয় না।
ইমেইল মার্কেটিং এ ভাল করতে হলে আগে আমাদের জানতে হবে ইমেইল মার্কেটিং এ কি কি কাজ আমরা সাধারনত করে থাকি ।
কাজগুলো নিম্নে দেওয়া হল :
- ইমেইল সংগ্রহ করা বা লিড জেনারেশন ।
- ইমেইল মার্কেটিং বিভিন্ন থার্ড পার্টি যেমন মেইলচিম্প, আই কন্টাক্ট, গেট রেস্পন্স ইত্যাদি ইমেইল
- মার্কেটিং প্লাটফর্ম এ ক্লায়েন্ট কে অ্যাকাউন্ট সেট আপ করে দেওয়া ।
- লিস্ট তৈরি করা, সাবস্ক্রাইবার আপলোড করা।
- সাইন আপ ফর্ম ডিজাইন এবং সাইন আপ ফর্ম ক্লায়েন্ট এর ওয়ার্ডপ্রেস সাইট এর সাথে ইন্টিগ্রেশন করা।
- ইমেইল টেম্পলেট ডিজাইন করা এবং ইমেইল কেম্পেইন করা বা ইমেইল সেন্ড করা ।
- অটোমেশন বা অটোরেস্পনডার সেট আপ করা ।
- সেগমেন্ট, বা গ্রুপিং করা ।
- রিপোর্ট এনালাইসিস করা ।
আমরা সাধারণত ইমেইল মার্কেটিং এ উপরোক্ত কাজ গুলো ই বেশি করে থাকি । তবে ইমেইল মার্কেটিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বেশি বিগ বাজেট এর কাজ হল ইমেইল টেম্পলেট ডিজাইন করা । কিছু কিছু মার্কেট প্লেস যেমন ফাইভার, পিপল পার আউওার এ শুধুমাত্র ইমেইল টেম্পলেট ডিজাইন এর উপর বহু কাজ পাওয়া যায় । সে ক্ষেত্রে ডিজাইন যদি ভাল না হয় তবে কাজ পাবার সম্ভাবনা কম ।
আপনি চাইলে টেম্পলেট ডিজাইন বাদ দিয়ে অন্য কাজ গুলো ও করতে পারেন তবে মনে রাখবেন আপনি কিন্তু ইমেইল মার্কেটিং এর কাজের মধ্যে সব থেকে বড় বাজেট এর কাজটি হারালেন । যদি আপনাদের ডিজাইন ভাল হয় তাহলে শুধু ইমেইল টেম্পলেট ডিজাইন করে মার্কেট প্লেস থেকে আয় করতে পারবেন এবং অনেকে তাই করে আয় করছে ।
এবার আসল কথায় আসি । ডিজাইন ভাল করার আসলে কোন মূলমন্ত্র নাই । যত বেশি ডিজাইন দেখে দেখে করবেন তত আপনার ডিজাইন দিন দিন সুন্দর হবে। আর আপনার যদি ক্রিয়েটিভিটি ভাল থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই । আপনাদের যাদের আমার মত ক্রিয়েটিভিটি নেই তাদের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে বলব গুগল এ সার্চ দিয়ে ভাল ভাল ইমেইল টেম্পলেট দেখে আপনার কন্টেন্ট নিয়ে সব গুলো থেকে একটু একটু আইডিয়া নিয়ে ডিজাইন করতে থাকেন । কিছুদিন পর দেখবেন আপনার ডিজাইন ও ইউনিক হচ্ছে এবং মার্কেট প্লেস এ কাজ করার মত ভাল মানের ডিজাইন আপনি করতে সক্ষম। কমপক্ষে ৫০+ ডিজাইন দেখে দেখে করেন, ফলাফল নিজেই দেখতে পারবেন ।
এবার আসি মার্কেট প্লেস এ কাজ করার ব্যাপারে । মার্কেট প্লেস এ এখন নতুন দের জন্য কাজ পাওয়া টা একটু টাফ । কিন্তু নিয়ম মেনে টাইমলি অ্যাকশন করতে পারলে কাজ আপনি পাবেন ই । ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি বিশেষ করে ফাইভার এ নতুন গিগ গুলোর জন্য কাজ পাওয়া টা একটা চ্যালেঞ্জ । যে গিগ গুলো হাই রেটিং এ আছে তাদের কাজের কোন অভাব নেই, কিন্তু যারা নতুন গিগ দিচ্ছে তারা সহজে কাজ পাচ্ছে না । এর কারন হল ফাইভার যেহেতু টেম্পলেট ডিজাইন এর কাজ ই বেশি তাই অনেকে যারা নতুন তারা ডিজাইন ভাল ভাবে প্রাকটিস না করেই গিগ দিয়ে কাজ পাবার পর হয়ত বায়ার কে সে ভাবে খুশি করতে পারে নাই যার জন্য ক্লায়েন্ট এক্সপার্ট দের শরণাপন্ন হচ্ছে । আমার লাস্ট কয়েকটা ক্লায়েন্ট সে রকম ই ইঙ্গিত দিয়েছে ।
কাজ না শিখে কাজ করতে যাওয়া টা কোনভাবেই উচিত নয় । এতে দেশের সুনাম নষ্ট হয় এবং আপনার ভবিষ্যৎ ও কঠিন চ্যালেঞ্জ এর মুখে পড়তে পারে। ধরুন আপনি মোটামুটি কাজ জেনে মার্কেট প্লেস এ কাজ করতে গেলেন এবং ভাগ্য ক্রমে একটি কাজ ও পেয়ে গেলেন । কিন্তু দক্ষতার অভাব থাকায় ক্লায়েন্ট কে সে ভাবে খুশি করতে পারলেন না । তাহলে জীবনের প্রথম কাজেই একটা বাজে ফিডব্যাক পাবার সম্ভাবনা থাকে এবং যদি এরকম হয়েই যায় তবে আপনার জন্য মার্কেট প্লেস এ কাজ পাওয়া টা অনেক কঠিন হবে পরবর্তীতে ।
এবার আসি আপ ওয়ার্ক এ কাজের কথায় । আমরা সবাই জানি আপ ওয়ার্ক এখন সব চেয়ে বড় মার্কেট প্লেস । এখানে যেমন কাজের কোন অভাব নেই তেমনি ফ্রিল্যাঞ্চার এর ও কোন অভাব নেই । তাই আপ ওয়ার্ক এ কাজ পেতে হলে আপনাকে নির্দিষ্ট সময় যেমন রাত ১০ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত অ্যাপ্লাই করে যেতে হবে । কমপক্ষে ১ মাস অ্যাপ্লাই করে যান আসা করি ফল পাবেন । তার পর ও যদি না পান তাহলে বুঝতে হবে আপনার কাভার লেটার লেখার মধ্যে কোন সমস্যা আছে অথবা আপনার প্রোফাইল এ কোন সমস্যা আছে এবং তা সম্পর্কে ভাল করে আইডিয়া নিয়ে পরে অ্যাপ্লাই করেন ।
একটা সময় মার্কেট প্লেস এ কাজ পাওয়া টা অনেক সহজ ছিল কিন্তু দিন দিন প্রতিযোগিতা বাড়ছে তাই আপনাকেও কাজ পাবার জন্য একটু হার্ড ওয়ার্ক করতেই হবে । ৩ মাস ও যদি চেষ্টার পরে কাজ না পান চিন্তা নেই , যখন পাওয়া শুরু করবেন তখন এই ৩ মাসের টাকা ৩ দিন কাজ করেই পুষিয়ে নিতে পারবেন । ফ্রীলাঞ্চিং এ অল্প পরিমান(২৫,০০০-৩০,০০০) ইনকামের কোন সুযোগ নেই । যদি কেউ বলে যে আমি ফ্রীলাঞ্চিং করে মাসে ২৫,০০০- ৩০,০০০ টাকা ইনকাম করে তাহলে বুঝবেন সে এখনও ফ্রীলাঞ্চিং শিখছে ।
কোন কিছু থেকে ভাল ফলাফল আশা করলে চেষ্টা করতে হবে এবং শ্রম দেবার মানসিকতা থাকতে হবে । চিতাবাঘের মত লক্ষটা অবিচল রাখুন । সফলতা আসবেই ।