ওয়েব সাইটের বাউন্স রেট কমানোর উপায় কি?
বাউন্সরেট মূলত পেজ ভিউ এর বিপরীত মেট্রিক্স। সুতরাং বাউন্সরেট হচ্ছে % (হার) যে পরিমাণ ট্রাফিফ শুধু মাত্র
সিংগেল পেজ পড়েই বাউন্স (Bounce) করে চলে যায়। বাউন্স রেট স্বাভাবিক তখনি যখন এটা কম থাকে যা সার্চ ইঞ্জিনের জন্যও ব্যাটার।
বাউন্সরেট ক্যালকুলেশন
বাউন্সরেট ক্যালকুলেশনের অপশনটি হচ্ছে
বাউন্সরেট= ১ পেজ পড়েই বের হয়ে যায় তার সংখ্যা/মোট ভিজিট * ১০০
ধরুন আপনার সাইটে প্রতি মাসে মোট 20,000 ভিজিটর আসে। আর এর মধ্যে 10,000 ভিজিটর যদি প্রথম পেজ পড়েই সাইট থেকে বের হয়ে যায়।
তবে আপনার সাইটের বাউন্সরেট ক্যালকুলেশন হবে এভাবে 10,000/20,000*100=50%।
সুতরাং আপনার সাইটের বাউন্সরেট হচ্ছে 50%।
এখানে মনে রাখা জরুরি যে, লোয়ার বাউন্স রেট= আপনার সাইট ভালো পার্ফোমেন্স করছে।
আর হায়ার বাউন্স রেট=আপনার সাইট থেকে দ্রুত ট্রাফিক চলে যাচ্ছে যা আপনার সাইটের জন্য কখনোই কাম্য নয়।
এজন্য হয়তো আপনাকে চরমমূল্য দিতে হতে পারে, সার্পে পজিশনও হারাবেন এক সময়।
নিচে Google Analytics এ এভারেজ স্টান্ডার্ড বাউন্সরেট এর পরিসংখ্যান দেখান হল::
- ১০-৩০% সার্ভিস সাইট
- ২০-৪০% রিটেইল সাইট
- ৩০-৫০% লিড জেনারেশন সাইট
- ৪০-৬০% কন্টেন্ট বেসড ওয়েবসাইট
- ৭০-৯০% ল্যান্ডিং পেজ
- ৭০-৯৮% ব্লগ
৩০% বাউন্সরেট যে কোন সাইটের জন্যই স্বাভাবিক তবে আমার মতে এর সহনীয় এভারেজ হার হচ্ছে ৫৫%।
কিন্তু যদি এই বাউন্সরেট ৬০% এর উপরে চলে যায় তবে আপনাকে এই বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
আর যদি এটা ৮০% প্লাস হয় তবে ত আপনার জন্য আলার্মিং রেট
বাউন্স রেট নিয়ন্ত্রনে করণীয়:
1. ইরিলিভেন্ট কিওয়ার্ড ইউজ করা যাবেনা। কেননা এতে করে ঐ ইরিলিভেন্ট কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করা ভিজিটর সাইটে গিয়ে তার রিলেভেন্ট কন্টেন্ট খুঁজে পাবেনা।
আর অবশ্যই সঠিক টাইটেল এবং ডেসক্রিপশনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
2. সাইটকে আগোছালো রাখা যাবে না। সিএসএস (CSS) দিয়ে অতিরিক্ত কালারফুল করে ফেলা যাবেনা।
মাত্রাতিরিক্ত বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা উচিৎ নয় এতে করে ভিজিটররা বিরক্ত হতে পারে, সুতরাং এই বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
এসব কারনে ভিজিটর সাইটে ঢুকেই বিরক্ত হয়ে যায়। সর্বোপরি সাইটের ডিজাইন সিম্পল রাখতে হবে।
3. ভিজিটর আসে তার প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে। যাকে আমরা ওয়েবমাস্টারিং ভাষায় কন্টেন্ট/পোষ্ট বলি।
তাই কন্টেন্ট লেখার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। পর্যাপ্ত রিলেভেন্ট এবং নির্ভুল কন্টেন্ট দিয়ে পোস্ট করতে হবে, যাতে তার ঐ বিষয়ে সকল
জিজ্ঞাসা আপনার পোস্ট পড়েই পূর্ণতা পায়। তা না হলে তারা ব্রাউজারের ব্যাক বাটন ক্লিক করে পুনরায় সার্চ ইঞ্জিন এর রেজাল্ট পেজে চলে যাবে।
এজন্যই রিলেভেন্ট কোয়ালিটি সম্পন্ন নির্ভুল পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে কন্টেন্ট/পোষ্ট করা বাঞ্ছনীয়।
4. পোষ্টের ভিতর রিলেভেন্ট ওয়ার্ডের উপর ইন্টারনাল লিংকিং করতে হবে। এতে করে এই পোষ্ট পড়ার পর ভিজিটররা এই বিষয়
রিলেটেড আরও পোষ্ট পড়তে আগ্রহী হবে। যার মাধ্যমে আপনার সাইটের পেজভিউ এর হার দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
যা বাউন্স রেট কমাতে সক্ষম। এমন কি এর মাধ্যমে আপনার সাইটে বিজ্ঞাপনে ক্লিকের সংখ্যা কিংবা প্রোডাক্ট সেলের হার বেড়ে যাবে।
কারন নিশ্চই বুঝতেই পারছেন, সেটা হল পেজ ভিউ বৃদ্ধি। এছাড়াও পেজে এক্সটারনাল লিংক ব্যাবহারের ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে।
5. সহজে কনটেন্ট পড়ার ব্যবস্থা সবচেয়ে বেশী যে কারনে ইউজার, ক্লায়েন্ট বা লিড, সাইট থেকে বাউন্স করে তা হল কন্টেন্ট পড়তে না পারা।
চাঙ্ক বা কন্টেন্টে হিজিবিজি করে আপলোড করা অনেক লেখা, কখনোই ইউজারের মনোযোগ কাড়বে না বরং ইউজার বিব্রত হবে এবং সাইট লিভ করবে।
6. অবশ্যই সাইট ইজি নেগিশিয়েবল হওয়া বাঞ্ছনীয় (ক্যাটাগরি বা মেনু যুক্ত করা)। মূল কথা হচ্ছে প্রফেশনাল একটা লুক দিতে হবে।
সর্বোপরি সাইটের লেয়াউটটা রেস্পনসিভ হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে ডেস্কটপ, মোবাইল, এমনকি টেব্লেট এও কম্পিটেবল হয়।
এই বিষয়টা বর্তমানে খুবি গুরুত্বপূর্ন একটা ব্যাপার।
7. আরও কিছু কাজও আছে। যেমন পোষ্টের নিচে রিলেটেড পোষ্ট স্থাপন এবং সাইড বারে রিসেন্ট পোষ্ট-মোস্ট পপুলার পোষ্ট ইত্যাদি উইজেট/গ্যাজেট অ্যাড করতে পারেন। এভাবে বিভিন্ন পুল কন্টেস্ট ও আয়োজন করা যেতে পারে। এছাড়াও এক্সটারনাল লিংক ইউজ করার ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে।
সর্বোপরি গুগল অ্যানালিটিকস আপনার সাইটের ডাটা গুলো নজরে রাখতে হবে।
8. উল্টাপাল্টা জায়গায় ব্যাক লিঙ্ক করবেন না। এটি অনেক বড় অংশে দায়ী আপনার সাইট এর বাউন্স রেট বাড়ার জন্য। যদি ব্যাক লিঙ্ক করেন তাহলে রিলিভেন্ট জায়গায় ব্যাক লিঙ্ক করবেন। ব্যাক লিঙ্ক করার আগে যে জিনিস টা মনে রাখবেন সেটা হল আপনার সাইট সে বিষয় এ সেই বিষয় সম্পর্কিত সাইট ব্যাক লিঙ্ক করার চেষ্টা করবেন। এতে যেমন আপনার সাইট এর বাউন্স রেট বারবে না তেমন গুগলেও পেনাল্টি খাবেন না।
9. সাইটের লোডিং টাইমের দিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ। সাইটটা যাতে খুব দ্রুত ওপেন হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সাইট লোড হওয়ার জন্য বেশি সময় নিলে ভিজিটর বিরক্ত হয়ে ব্রাউজারের ব্যাক বাটন ক্লিক করে পুনরায় সার্চ ইঞ্জিন এর রেজাল্ট পেজে চলে যাবে।
অথবা আপনার সাইট ওপেন করা ট্যাব কেটে দেবে।