ভিডিপি কি?
ভিডিপি অর্থাৎ (Village Defence Party) বা গ্রাম প্রতিরক্ষা দল/বাহিনী।
গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী‘র সদস্য বা সদস্যা হতে হলে সংশ্লিষ্ট গ্রামের প্লাটুনলিষ্টের অন্তর্ভূক্ত হলেই চলে।
প্লাটুনভূক্ত করতে পারেন গ্রামটি যে উপজেলায় অবস্থিত সে উপজেলা‘র আনসার ভিডিডি কর্মকর্তা।
তাঁর অফিস উপজেলা সদরে। গ্রাম প্লাটুনে শূন্য পদ থাকলে তার বিপরীতে তিনি প্লাটুন ভূক্ত করতে পারেন।
কিন্তু প্লাটুনভুক্ত হলেই প্রশিক্ষনের, ব্যাংক ঋণের বা চাকুরীক্ষেত্রে‘র সব সুবিধা পাওয়া যাবে না।
ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণঃ
এ বাহিনীর প্রথম প্রশিক্ষণ হলো ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণ।
অদ্যাবধি প্রচলিত নিয়ম অনুসারে দুই উপায়ে এ মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহন করা যেতে পারে।
১. গ্রাম ভিত্তিক ১০দিন মেয়াদী অস্ত্রবিহীন মৌলিক প্রশিক্ষণ
২. জেলা সদরে বা নিকটবর্তী জেলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ২১দিন মেয়াদী অস্ত্রসহ মৌলিক প্রশিক্ষণ
অস্ত্রবিহীন মৌলিক প্রশিক্ষণঃ
অস্ত্র বিহীন গ্রাম ভিত্তিক ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষনটি সদর দপ্তর নির্ধারিত ক্যাটাগরির গ্রামেই শুধু অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
বর্তমান প্রশিক্ষণ বর্ষে (2015-2016) মহা সড়ক , রেলপথের পার্শ্ববর্তী গ্রাম ও আশ্রায়ন প্রকল্পের গুচ্ছগ্রামগুলির কিছু কিছু গ্রামে প্রশিক্ষণ হয়েছে এবং হচ্ছে। এক গ্রামের প্রশিক্ষণার্থি অন্যগ্রামে নামদিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন না।
তথ্য গোপন করে কেউ এরকমভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলেও ভবিষ্যতে সে প্রশিক্ষণ কোন কাজে লাগাতে গেলে সনদ পত্র আটকে যাবে। কারণ চাকুরীর ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন । পুলিশি অনুসন্ধানে এ তথ্য ভিন্নতা দেখা দিলে পুলিশ নেতিবাচক (Negative) প্রতিবেদন দাখিল করবেন এবং চাকুরী দাতা তাকে চাকুরী দিবেন না বা চাকুরী থেকে বহিস্কার করবেন।
অস্ত্রসহ মৌলিক প্রশিক্ষণঃ
অস্ত্রসহ ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষন জেলার যে কোন প্লাটুনভূক্ত এবং গ্রামভিত্তিক প্রশিক্ষণ সনদধারী করতে পারবেন। এক এক ধাপে প্রায় ২০০জন বা তার কাছাকাছি সংখ্যক প্রশিক্ষণার্থি এ প্রশিক্ষণ গ্রহন করতে পারেন।
নরসিংদী জেলার এ প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়, এবং শেষের দিন গাজীপুর জেলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সফিপুরে জেলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে।
আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণঃ
আনসার মৌলিক প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহন করতে হলে অবশ্য অবশ্যই উপরে বর্ণিত দুইটির যে কোন একটি মৌলিক প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।মৌলিক প্রশিক্ষণ সনদ থাকতে হবে। বয়স ১৮ থেকে ৩০ এর মধ্যে থাকতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা এস এস সি‘র নিচে হবে না। উচ্চতা ও শারিরিক সক্ষমতা যত বেশী হবে প্রশিক্ষনে অংশগ্রহনের সুযোগ তত বেশী থাকবে।জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে।পরিচয়পত্রের আবেদন করা হয়েছে এমন রিসিপ্ট দিয়ে গত প্রশিক্ষণে
প্রশিক্ষণার্থি নেয়া হয় নি। সুতরাং প্রশিক্ষণ করতে চাইলে এ প্রস্তুতিগুলো আবশ্যিকভাবে থাকা বাঞ্ছনীয়।
এ প্রশিক্ষনের দুই সপ্তাহ হয় জেলা সদরে।বাকী আট সপ্তাহ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী একাডেমীতে।
পিটি ড্রিল ছাড়াও প্রশিক্ষণ কোর্সের অন্তর্ভূক্ত থাকে .৩০৩ রাইফেল, ৭.৬২ এমএম চাইনা রাইফেল, ৯ এমএম শটগান এবং ফ্রিহ্যান্ড কমব্যাট(বুথান-মার্শাল আর্ট) । প্রশিক্ষণ শেষে একাডেমী থেকেই প্রত্যেক সফল প্রশিক্ষণার্থিকে স্মার্টকার্ড দেয়া হয়। স্মার্টকার্ড প্রদানকালে অটোমেটেডে সিস্টেমে তাদের সকল তথ্য অন্তভূর্ক্ত হয়ে যায় এবং অংগীভূত আনসারের চাকুরীর জন্য শুণ্যতা সাপেক্ষে তার রেজিষ্টার্ড মোবাইল নম্বরে চাকুরীর অফার আসে।
ব্যাটালিয়ন আনসারঃ
ব্যাটালিয়ন আনসারে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আসে ওয়েবসাইটে এবং জাতীয় দৈনিক সমূহে। সময়ে সময়ে নতুন ইউনিট গঠিত হলে বা পদের শুণ্যতা সাপেক্ষে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে গঠিত কমিটির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রশিক্ষণার্থি বাছাই কার্যক্রম চলে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত ক্যাটাগরি অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থি বাছাই হয়।
এ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ আনসার প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়। ভিডিপি সদস্য-সদস্যাগণও অগ্রাধিকার পান তবে বাংলাদেশের যে কোন উপযুক্ত নাগরিক এ প্রশিক্ষণের জন্য প্রার্থি হতে পারেন। প্রশিক্ষণ হয় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী একাডেমী, শফিপুর, গাজীপুরে।কোর্সের অন্তর্ভূক্ত থাকে .৩০৩ রাইফেল, ৭.৬২ এমএম চাইনা রাইফেল, ৭.৬২এমএম এস এমজি, ৭.৬২ এলএমজি, ৯এমএম শটগান এবং ফ্রিহ্যান্ড কমব্যাট(বুথান-মার্শাল আর্ট)। পর্যায়ক্রমে ব্যাটালিয়ন আনসারগণ হেভি মেশিনগান, মর্টার, হ্যান্ডগ্রানেড ইত্যাদি নানাবিধ অস্ত্র ও রণকৌশল প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন এবং ফায়ারিং অনুশীলন করেন। সফলভাবে সম্পন্নকারী প্রশিক্ষনার্থিগণকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। একাদিক্রেমে ০৬বছর সফলভাবে চাকুরী সম্পন্ন করার পর তাদের চাকুরী স্থায়ীকরণ হয়।স্থায়ী করনের সময় পূর্ববর্তী ০৬বছরের মধ্যে ০৩বছর স্থায়ী চাকুরীকালের সাথে যুক্ত হয়।
অনন্যা পেশা ভিত্তিক প্রশিক্ষণঃ
মটর ড্রাইভিং, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন সার্ভিসিং, সেলাই, নিটিং, ওয়েভিং, ম্যাশণ, ওয়েলডিং, ইলেক্ট্রিশিয়ান, ঢিভি ফ্রিজ রিপেয়ারিং, ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিশিয়ান ইত্যাদি যেকোন কোর্সে অংশগ্রহণ করতে চাইলে তার ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।