যারা কম্পিউটার ব্যবহার করেন চোখ তাদের ভাল রাখার উপায় জেনে রাখা আবশ্যক
কম্পিউটার ব্যবহারকারীর চোখের ভুমিকা অপরিসীম। তাই কম্পিউটার ব্যবহারকারী হিসেবে চোখ ভাল রাখার উপায় জেনে রাখা আবশ্যক।কম্পিউটারে যারা কাজ করছেন তারা প্রথমেই চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করে জেনে নিন চোখে দৃষ্টিগত সমস্যা আছে কিনা।
যদি দৃষ্টিগত সমস্যা থাকে তবে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করুন।
রাতে কম্পিউটারে কাজ করলে বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে ঘুম নষ্ট হয়ে যায়, এ কথা হয়তো অনেকেই শুনেছেন।
কিন্তু ফোন বা কম্পিউটারের স্ক্রিন কেন ঘুম নষ্ট করার জন্য দায়ী? এলইডি স্ক্রিন থেকে নির্গত কৃত্রিম নীল আলো ঘুমের চক্র নষ্ট করে দেয় এবং স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। মেলাটোনিন হচ্ছে দেহে ঘুম আনার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন।
এ ছাড়া ক্যানসারের মতো রোগের বিস্তারে প্রতিরোধ গড়ে তোলে মেলাটোনিন।
গবেষকেরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন যে শরীরে মেলাটোনিন নামক উৎসেচকের উত্পাদন প্রক্রিয়ায় এলইডি স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো এই ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করে।
এক্ষেত্রে চশমার প্রয়োজন হতে পারে। যদি আপনার চোখের জন্য পাওয়ারের কোন চশমা প্রয়োজন না হয় তাহলে কম্পিউটারে কাজের সময় পাওয়ার ছাড়া চশমা ব্যবহার করুন।

Closeup portrait of a happy senior man working on a computer
অন্ধকার ঘরে কম্পিউটার চালাবেন না। কম্পিউটার ব্যবহারের সময় মনিটর বরাবর উপরের দিকে টিউব লাইট জ্বালিয়ে রাখুন।মনিটরের উল্টাদিকে মনিটরে প্রতিফলিত হয় এমন কোন বাতি জ্বালিয়ে রাখবেন না।
দিনের বেলায় কম্পিউটার ব্যবহারের সময় মনিটরের উল্টাদিকে মনিটরে প্রতিফলিত হয় এমন দরজা জানালা বন্ধ রাখুন।
মনিটরের দিকে সরাসরি মুখ করে বসে কম্পিউটার ব্যবহার করুন। বাঁকা বা তীর্যক চোখে তাকাতে হয় এমন করে বসবেন না।
একটানা অনেকক্ষন মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকা ঠিক নয়। এক্ষেত্রে কিছুক্ষণ পর পর চোখকে বিশ্রাম দেয়া উচিৎ।
বিশ্রামের জন্য কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রেখে আবার কাজ শুরু করুন।
যাদের বয়স ৪০এর উপরে তাদের চোখে এর আগে কখনও কোন কিছু দেখতে অসুবিধা না হলেও এখন কাছের ছোট লেখাপড়া সহ ছোট যে কোন কিছুই দেখতে অসুবিধা হবে।
সেই সুত্রে কম্পিউটারে কাজ করতেও অসুবিধা হবে।এরকম অসুবিধা হবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো বাইফোকাল চশমা ব্যবহার করতে হবে। যারা আগে থেকেই দূরে দেখার জন্য চোখে পাওয়ার চশমা ব্যবহার করেন ৪০ বছর বয়স পূর্ণ হলে বা বেশী হলে তাদের চশমা পরিবর্তন করে বাইফোকাল করে নিতে হবে।
নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার চোখ ভাল রাখে তাই নিয়মিত ফলমূল সহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করুন।
ডায়াবেটিস বা প্রেসার থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়ন্ত্রনে রাখুন।
মনে রাখবেন দৃষ্টিশক্তির ত্রুটি থাকলে এবং চোখে চশমার প্রয়োজন হলে চমশাব্যবহার করা উত্তম নতুবা আস্তে আস্তে চোখের স্থায়ী ক্ষতি হতে থাকবে।
নীল আলো থেকে আমাদের নিজেদের রক্ষা পেতে:
আমরা আমাদের মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের স্ক্রিনের জন্য ব্লু লাইট ফিল্টার করার অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করতে পারি। এছাড়া আমাদের অনেকের মনিটরে বিল্ট ইন নাইট মোড থাকে, সেটা আমরা ব্যবহার করতে পারি। এছাড়া উইন্ডোজ টেনের সর্বশেষ আপডেটে নাইট মোড দেয়া হয়েছে, আমরা সেটাও ব্যবহার করতে পারি।
আমরা আমাদের ঘরের আলো পরিবর্তন করে ফেলতে পারি। সেক্ষেত্রে আমাদেরকে কালার টেম্পারেচার বা আলোর তাপমাত্রা মেপে আলোর উৎস নির্ধারন করতে হবে।
সেক্ষেত্রে আমাদের ২৪০০কে বা কেলভিনের নিচে আলো নির্ধারন করতে হবে।
৬৪০০কে এর বাল্ব বা আলোর উৎসগুলো হবে একেবারে সাদা যাতে নীলের পরিমাণ বেশি। এবং এই কেলভিন রেটিং যত কমবে, আলোর তাপমাত্রা বাড়বে, অর্থাৎ হলদে হবে এবং নীল আলোর পরিমাণ কমে যাবে। তাই আমরা ঘরে হলদে আলো ব্যবহার করতে পারি।
আপনার জীবনে আপনি যে কাজই করুন না কেন চোখ আপনাকে সর্বাধীক সহযোগীতা করে।
তাই চোখের যত্ন নিন চোখ ভাল রাখুন, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।