ওয়ার্ডপ্রেস কি? এবং এর সুবিধা কি? এর ভবিষ্যৎ কি?
ওয়ার্ডপ্রেস হল একটি সিএমএস (CMS) বা কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। যার মাধ্যমে খুব সহজেই যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট এবং ব্লগ তৈরি করা যায়। বর্তমানে ৭.৫ মিলিয়ন ওয়েবসাইটের ভিতর ১.২ মিলিয়ন মানুষ ওয়ার্ডপ্রেস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে।
এটি ওপেনসোর্স সফটওয়ার হওয়ায় বিশ্ব দরবারে অধিক জনপ্রিয়।
ওয়ার্ডপ্রেস এর ইতিহাসঃ
ওয়ার্ডপ্রেস এর সস্ট্রা হলেন ম্যাট মুলেনওয়েগ। তিনি ২০০৩ সালের ২৭ শে মে মাসে সর্বপ্রথম ওয়ার্ডপ্রেস প্রকাশ করেন।
ওয়ার্ডপ্রেস সর্বপ্রথম ২০০৩ সালে ম্যাট মুলেনওয়েগ ওবং মাইক লিটিল কর্তৃক বি২ ইভুলুয়েশন এর একটি ছোট প্রেজেক্ট ছিল।
আর আমরা বর্তমানে যে ওয়ার্ডপ্রেস নামে এটাকে চিনি এটা ম্যাট মুলেনওয়েগ এর বন্ধু ক্রিস্টিন সেল্লেক ট্রিমুলেট এর পছন্দ করে দেয়া নাম।
ওয়ার্ডপ্রেসের সাফল্যের চাবিঃ
ওয়ার্ডপ্রেস এর সাফল্যের মুল চাবি হল এর আধুনিকায়ন। যুগের সাথে তাল মিলাতে ওয়ার্ডপ্রেস পায় প্রতি বছরই ওয়ার্ডপ্রেসের বড়
ধরনের আপডেট নিয়ে আসে। তাছাড়া প্রতিনিয়তই ছোট ছোট আপডেট নিয়ে আসে ওয়ার্ডপ্রেস।
যা এর ব্যবহারকারীদেরকে দেয় নতুনত্তের ছোঁয়া। তাছাড়া ওয়ার্ডপ্রেস হল সহজ এবং নিরাপদ একটি কন্টেন্ট মেনেনেজমেন্ট সিস্টেম।
ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে নিজস্ব থিম এবং প্লাগিন ডাইরেক্টরি যেখানে আছে অসংখ্য থিম এবং প্লাগিন। এটাও এর জনপ্রিয়তার একটি কারন।
ওয়ার্ডপ্রেসের সুবিধা সমূহঃ
আসলে ওয়ার্ডপ্রেসের সুবিধার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তারপরেও ওয়ার্ডপ্রেসের প্রধান কিছু সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করছিঃ
ওয়ার্ডপ্রেস একটি ওপেনসোর্স সিএমএস বিধায় এর জন্য কোন অর্থ প্রদান করতে হয় না।
ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে সহজ এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস, যা অদক্ষ ব্যবহারকারীও খুব সহজেই এটা ব্যবহার করতে পারে।
ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে অগণিত থিম এবং প্লাগিন এর ফ্রি ডাইরেক্টরি, যা আপনার কাজকে করে তুলবে গতিময় এবং আরও সহজ।
ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে ব্লগসাইট, বিজনেস সাইট, ই-কমার্স সাইট, বিভিন্ন ওয়েব এপ্লিকেশন সাইট ইত্যাদি সহ যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট খুব সহজেই তৈরি করা যায়।
ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে অসাধারন একটি টেক্সট এডিটর যেখানে আপনি একসাথে ভিজুয়াল এবং HTML ভিউতেই লিখতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেসে রয়েছে বিল্ট-ইন মিডিয়া আপলোডার, যার মাধ্যমে খুব সহজেই লেখার মাঝে ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি যুক্ত করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেসে রয়েছে ইউজার ফ্রেন্ডলি নেভিগেশন সিস্টেম। যা, আপনার ওয়েবসাটকে করে তুলবে সুন্দর এবং সহজ।
ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটটিকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইটের সাথে যুক্ত করতে পারবেন। এতে বিশ্বের সাথে আপনার ওয়েবসাইটটি পরিচিত হবে।
ওয়ার্ডপ্রেস একটি সম্পূর্ণ এসইও ফ্রেন্ডলি CMS, ফলে সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে আপনার ওয়েবসাইট থাকবে এক ধাপ এগিয়ে।
ওয়ার্ডপ্রেসে রয়েছে ইউআরএল স্ট্রাকচার নিয়ন্ত্রন করার ব্যবস্থা। ফলে আপনি আপনার ইচ্ছামতো এটাকে পরিবর্তন করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেসের সব গুন এভাবে বলা সম্ভব না। আপনি এটা ব্যবহার করলেই এটার প্রেমে পরে যাবেন নিশ্চিত।
এই হল ওয়ার্ডপ্রেস, যাকে ব্লগিং জগতের রাজা বলা হয়। বর্তমানে ব্লগিং এর কথা বলতে গেলেই ওয়ার্ডপ্রেসের নাম চলে আসে।
বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় সাইট ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
আপনারা যেই ওয়েবসাইটে এই পোস্টটি পড়ছেন, এটিও ওয়ার্ডপ্রেস দিয়েই করা।
ওয়ার্ডপ্রেসে তৈরি করা দারুন এবং আকর্ষণীয় সাইটগুলি দেখতে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস শোকেস এ যেতে পারেন
ওয়ার্ডপ্রেস এর ভবিষ্যৎ কি?
ওয়ার্ডপ্রেস এর ভবিষ্যৎ আমার মতে উজ্জ্বল। কারণ গুলোও সুস্পষ্ট, প্রথমত, ধীরে ধীরে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগার থেকে একজন ডিজাইনার হবেন কারণ আপনি এইচটিএমএল, সিএসএস শিখবেন। এরপর যখন আপনি পিএইচপি এবং মাইসিকুয়েল শিখবেন নিজেকে ওয়েব ডিজাইনার থেকে ওয়েব ডেভেলপার এর দিকে নিয়ে যাবেন। তার মানে কি দাঁড়াল? আপনি শুরু করলেন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে, হয়ে গেলেন ওয়েব ডেভেলপার।
আর একজন ভাল ওয়েব ডেভেলপার চাহিদা বা মূল্য যাই বলি না কেন, অনেক বেশি। দ্বিতীয়ত, আপনি ওয়ার্ডপ্রেস সাইট ব্যবহার করে ব্লগিং করে অর্থ ও উপার্জন করতে পারেন। বর্তমান সময়ে সব থেকে আলোচিত বিষয় ফ্রীলান্সিং। ফ্রীলান্সিং মার্কেট গুলোতে একজন ভাল মানের ওয়েব ডেভেলপারের কদর বেশ। আপনি খুব সহজেই ভাল মানের ফ্রীলান্সার হিসেবে নিজেকে একটি জায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন।
তৃতীয়ত, আপনি যদি কোন আইটি ফার্ম খুলতে চান, তাহলে আপনাকে মেন্টালি সাহায্য করবে, এক জন ডেভেলপার হিসেবে। এর বাহিরেও আর ও অনেক বিষয় আছে যা আমি এখানে আলোচনা করতে চাইছি না। এক কোথায় বলা যায়, ওয়ার্ডপ্রেস এর ভবিষ্যৎ সব থেকে পরিষ্কার এবং সম্ভাবনাময়।