BestEarnIdea.com
Home
Terms & Conditions
Privacy Policy
Contact US
About
Menu
Home
Terms & Conditions
Privacy Policy
Contact US
About
Log In
Remember Me
Register
Lost your Password
Home
পুঁতির মালা
কবর কবিতা, জসীম উদ্দীন
In:
General
,
Message
No Comments
কবর কবিতা, জসীম উদ্দীন
ইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।
এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,
সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা।
সোনালী ঊষায় সোনামুখে তার আমার নয়ন ভরি,
লাঙ্গল লইয়া ক্ষেতে ছুটিতাম গাঁয়ের ও-পথ ধরি।
যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত,
এ কথা লইয়া ভাবি-সাব মোর তামাশা করিত শত।
এমন করিয়া জানিনা কখন জীবনের সাথে মিশে,
ছোট-খাট তার হাসি-
ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।
বাপের বাড়িতে যাইবার কালে কহিত ধরিয়া পা,
আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গাঁ।
শাপলার হাটে তরমুজ বেচি দু
পয়সা করি দেড়ী,
পুঁতির মালা এক ছড়া নিতে কখনও হতনা দেরি।
দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,
সন্ধ্যাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুর বাড়ির বাটে !
হেস না–হেস না–শোন দাদু সেই তামাক
মাজন পেয়ে,
দাদী যে তোমার কত খুশি হোত দেখিতিস যদি চেয়ে।
নথ নেড়ে নেড়ে কহিত হাসিয়া, ‘এতদিন
পরে এলে,
পথপানে চেয়ে আমি যে হেথায়
কেঁদে মরি আঁখি জলে।’
আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন
করিয়া হায়,
কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝ্ঝুম
নিরালায়।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ্ দাদু, ‘আয় খোদা,
দয়াময়,
আমার দাদীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নাজেল হয়।’
তার পরে এই শুন্য জীবনে যত
কাটিয়াছি পাড়ি,
যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই
চলে গেছে ছাড়ি।
শত কাফনের শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি
গনিয়া গনিয়া ভুল করে গনি সারা দিনরাত জাগি।
এই মোর হাতে কোদাল ধরিয়া কঠিন মাটির তলে,
গাড়িয়া দিয়াছি কতসোনা মুখ
নাওয়ায়ে চোখের জলে।
মাটিরে আমি যে বড় ভালবাসি,
মাটিতে লাগায়ে বুক,
আয় আয় দাদু, গলাগলি ধরে কেঁদে যদি হয় সুখ।
এইখানে তোর বাপ্জী ঘুমায়, এইখানে তোর মা,
কাঁদছিস তুই ? কি করিব দাদু, পরান
যে মানে না !
সেই ফাল্গুনে বাপ তোর এসে কহিল
আমারে ডাকি,
বা-জান, আমার শরীর
আজিকে কি যে করে থাকি থাকি।
ঘরের মেঝেতে সপ্ টি বিছায়ে কহিলাম,
বাছা শোও,
সেই শোওয়া তার শেষ
শোওয়া হবে তাহা কি জানিত কেউ ?
গোরের কাফনে সাজায়ে তাহারে চলিলাম
যবে বয়ে,
তুমি যে কহিলা–বা-জানেরে মোর কোথা যাও দাদু লয়ে?
তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেল মুখে,
সারা দুনিয়ার যত
ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে।
তোমার বাপের লাঙল-জোয়াল দু
হাতে জড়ায়ে ধরি,
তোমার মায়ে যে কতই কাঁদিত সারা দিন-মান ভরি।
গাছের পাতারা সেই বেদনায় বুনো পথে যেত ঝরে,
ফাল্গুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত
শুনো মাঠখানি ভরে।
পথ দিয়ে যেতে গেঁয়ো-
পথিকেরা মুছিয়া যাইতো চোখ,
চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক।
আথালে দুইটি জোয়ান বলদ সারা মাঠ
পানে চাহি,
হাম্বা রবেতে বুক ফাটাইত নয়নের জলে নাহি।
গলাটি তাদের জড়ায়ে ধরিয়া কাঁদিত তোমার মা,
চোখের জলের গহীন সায়রে ডুবায়ে সকল গাঁ।
উদাসিনী সেই পল্লীবালার নয়নের জল বুঝি,
কবর দেশের আন্ধার ঘরে পথ পেয়েছিল খুঁজি।
তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ,
হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বীষের তাজ।
মরিবার কালে তোরে কাছে ডেকে কহিল,
‘বাছারে যাই,
বড় ব্যথা রল দুনিয়াতে তোর মা বলিতে কেহ নাই;
দুলাল আমার, দাদু রে আমার, লক্ষ্মী আমার ওরে,
কত ব্যথা মোর
আমি জানি বাছা ছাড়িয়া যাইতে তোরে।’
ফোঁটায় ফোঁটায় দুইটি গণ্ড ভিজায়ে নয়ন-
জলে,
কি জানি আশিস্ করি গেল তোরে মরণ-
ব্যথার ছলে।
ক্ষণ পরে মোরে ডাকিয়া কহিল, ‘আমার কবর
গায়,
স্বামীর মাথার ‘মাথাল’ খানিরে ঝুলাইয়া দিও
বায়।’
সেই সে মাথাল পচিয়া গলিয়া মিশেছে মাটির
সনে,
পরানের
ব্যথা মরে না কো সে যে কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।
জোড়-
মানিকেরা ঘুমায়ে রয়েছে এইখানে তরু-ছায়,
গাছের শাখারা স্নেহের মায়ায়
লুটায়ে পড়েছে গায়ে।
জোনাকি মেয়েরা সারা রাত
জাগি জ্বালাইয়া দেয় আলো,
ঝিঁঝিরা বাজায় ঘুমের নুপুর কত যেন
বেসে ভাল।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু,’রহমান
খোদা, আয়,
ভেস্ত নাজেল করিও আজিকে আমার বাপ ও
মায়ে।’
এইখানে তোর বু-জীর কবর, পরীর মতন
মেয়ে,
বিয়ে দিয়েছিনু কাজীদের ঘরে বনিয়াদী ঘর
পেয়ে।
এত আদরের বু-জীরে তাহারা ভালবাসিত
না মোটে।
হাতেতে যদিও না মারিত তারে শত যে মারিত
ঠোঁটে।
খবরের পর খবর পাঠাত, ‘দাদু যেন কাল এসে,
দু দিনের তরে নিয়ে যায় মোরে বাপের বাড়ির
দেশে।
শ্বশুর তাহার কসাই চামার,
চাহে কি ছাড়িয়া দিতে,
অনেক কহিয়া সেবার তাহারে আনিলাম এক
শীতে।
সেই সোনামুখ মলিন হয়েছে,
ফোটে না সেথায় হাসি,
কালো দুটি চোখে রহিয়া রহিয়া অশ্রু উঠিত
ভাসি।
বাপের মায়ের কবরে বসিয়া কাঁদিয়া কাটাত
দিন,
কে জানিত হায়, তাহারও
পরানে বাজিবে মরণ-বীণ!
কি জানি পচানো জ্বরেতে ধরিল আর উঠিল
না ফিরে,
এইখানে তারে কবর দিয়াছি দেখে যাও দাদু
ধীরে।
ব্যথাতুরা সেই হতভাগিনীরে বাসে নাই কেউ
ভাল,
কবরে তাহার
জড়ায়ে রয়েছে বুনো ঘাসগুলি কালো।
বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন,
পাতায় পাতায় কেঁপে ওঠে যেন তারি বেদনার
বীণ।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু,’আয়
খোদা দয়াময়!।
আমার বু-জীর তরেতে যেন গো ভেস্ত
নাজেল হয়।’
হেথায় ঘুমায় তোর ছোট ফুপু সাত বছরের
মেয়ে,
রামধনু বুঝি নেমে এসেছিল ভেস্তের দ্বার
বেয়ে।
ছোট বয়সেই মায়েরে হারায়ে কি জানি ভাবিত
সদা,
অতটুকু বুকে লুকাইয়াছিল কে জানিত কত
ব্যথা।
ফুলের মতন মুখখানি তার দেখিতাম যবে চেয়ে,
তোমার দাদীর মুখখানি মোর হৃদয়ে উঠিত
ছেয়ে।
বুকেতে তাহারে জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম
সারা,
রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের
ধারা।
একদিন গেনু গজ্নার
হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,
ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের
পরে।
সেইসোনামুখ গোলগাল হাত সকলি তেমন
আছে,
কি জেনি সাপের দংশন পেয়ে মা আমার
চলে গ্যাছে।
আপন হসেতে সোনার প্রতিমা কবরে দিলাম
গাড়ি–
দাদু ধর–ধর–বুক ফেটে যায়, আর
বুঝি নাহি পারি।
এইখানে এই কবরের পাশে, আরও কাছে আয়
দাদু,
কথা ক’সনাক, জাগিয়া উঠিবে ঘুম-
ভোলা মোর যাদু।
আস্তে আস্তে খুড়ে দেখ্ দেখি কঠিন মাটির
তলে,
দীন দুনিয়ার ভেস্ত আমার ঘুমায় কিসের ছলে।
ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিছে ঘন আবিরের
রাগে,
এমনি করিয়া লুটায়ে পড়িতে বড় সাধ আজ
জাগে।
মজীদহইছে আজান হাঁকিছে বড় সকরুণ সুর,
মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত
দুর!
জোড়হাতে দাদু মোনাজাত কর্, ‘আয় খোদা,
রহমান,
ভেস্ত নাজেল করিও সকল মৃত্যু-ব্যথিত
প্রাণ!’
Recent Posts
ডোমেইন এবং হোস্টিং গাইড 2025
২০২৫ সালে ফেসবুক অ্যাডস আপডেট ও অ্যালগরিদমে বেশ কিছু পরিবর্তন
কিভাবে অনলাইন কোর্স ও ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করে দক্ষতা বাড়ানো যায়
বিকাশে পেমেন্ট করার সহজ পদ্ধতি: বিস্তারিত গাইড ২০২৫
RedotPay কী? RedotPay অ্যাকাউন্ট কিভাবে তৈরি করবেন?
Recent Posts
ডোমেইন এবং হোস্টিং গাইড 2025
জানুয়ারি ১৮, ২০২৫
২০২৫ সালে ফেসবুক অ্যাডস আপডেট ও অ্যালগরিদমে বেশ কিছু পরিবর্তন
জানুয়ারি ১৮, ২০২৫
কিভাবে অনলাইন কোর্স ও ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করে দক্ষতা বাড়ানো যায়
জানুয়ারি ১৬, ২০২৫
বিকাশে পেমেন্ট করার সহজ পদ্ধতি: বিস্তারিত গাইড ২০২৫
জানুয়ারি ১১, ২০২৫
RedotPay কী? RedotPay অ্যাকাউন্ট কিভাবে তৈরি করবেন?
ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
©2016-22 Powered By Bestearnidea.com Theme By
Bestearnidea.com
Home
About
Contact us
Privacy Policy
Terms & Conditions