নামাযের শুরু হইতে শেষ পর্যন্ত ৫১টি সুন্নাত
ক্বিয়ামে ১১টি সুন্নাত:
১। তাকবীরে তাহরিমার সময় সোজা হয়ে দাঁড়ানো অর্থাৎ মাথা নিচু না করা।
২। দুই পায়ের মাঝখানে ৪ আঙ্গুল ফাঁকা রাখা।
৩। মুকতাদীর তাকবীরে তাহরিমা ইমামের তাকবীরে তাহরিমার সংগে হওয়া।
৪।তাকবীরে তাহরিমার সময় দুই হাত কান পর্যন্ত উঠানো।
৫। হাতের তালু ক্বিবলার দিকে রাখা।
৬। আঙ্গুলগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা অর্থাৎ বেশি খুলে অথবা বেশি বন্ধ করে না রাখা।
৭। ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের উপরে রাখা।
৮। কনিষ্ঠ আঙ্গুল বাজুর উপরে রাখা।
৯।মাঝের ৩ আঙ্গুল বাজুর উপরে রাখা।
১০। নাভির নিচে হাত বাঁধা ।
১১। ছানা পড়া।
কেরাতে ৭টি সুন্নাত:
১। আউজু বিল্লাহ পড়া।
২। বিসমিল্লাহ পড়া।
৩। আমিন আস্তে বলা।
৪। ফজর এবং যোহরে তেওয়াতে মুফাচ্ছাল পড়া অর্থাৎ সুরায়ে হুজুরাত থেকে বুরুজ পর্যন্ত, আসর এবং এশা আওছাতে মুফাচ্ছাল অর্থাৎ সূরা বুরুজ থেকে বাইয়্যেনাহ পর্যন্ত, এবং মাগরিবে ক্বেছারে মোফাচ্ছাল অর্থাৎ সুরা ঝিলঝাল থেকে নাস পর্যন্ত পড়া।
৫। ফজরের প্রথম রাকাত লম্বা করা।
৬। খুব তাড়াতাড়ি এবং খুব ধীরে ধীরে না পড়া বরং মধ্যম পড়া।
৭। ফরজের তৃতীয় এবং চতুর্থ রাকাতে শুধু সূরা ফাতেহা পড়া।
রুকুর সুন্নাত ৮টি:
১। রুকুর তাকবীর বলা।
২। রুকুর ভিতরে দুই হাত দিয়ে হাটু ধরা।
৩। হাটু ধরার সময় আঙ্গুল খুলিয়া রাখা।
৪। পায়ের পেন্ডলী সোজা রাখা।
৫। পিঠ বিছাইয়া দেওয়া।
৬।মাথা এবং পাছা সমান রাখা।
৭। রুকুর ভিতরে কমপক্ষে তিনবার سبحان ربى العظيم বলা।
৮।রুকু থেকে উঠার সময় ইমাম سميع الله لمن حمده এবং মুক্তাদী ربنا لك الحمد এবং মুনফারেদ উভয়টা বলা।
সিজদার সুন্নাত ১২টি:
১। সিজদার তাকবীর বলা।
২।সিজদার ভিতরে প্রথমে হাটু রাখা।
৩। পুনরায় দুই হাত রাখা।
৪। পুনরায় নাক রাখা।
৫। কপাল রাখা।
৫। দুই হাতের মাঝখানে সিজদা করা।
৬। সিজদার সময় পেট এবং রান আলাদা রাখা।
৭। বাহু থেকে বাজু আলাদা রাখা।
৮। কনুই মাটি থেকে আলাদা রাখা।
৯। সিজদার ভিতরে কমপক্ষে তিনবার سبحان ربى الا على বলা।
১০। সিজদা থেকে ওঠার তাকবীর বলা।
১১। সিজাদ থেকে ওঠার সময় প্রথমে কপাল, তারপর নাক, তারপর হাত, শেষে হাটু উঠানো এবং দুই সিজদার মাঝখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসা।
কুঞ্চদার ১৩ সুন্নাত:
১। ডান পা খাড়া রাখিয়া বাম পা বিছাইয়া বসা এবং আঙ্গুল কিবলার দিকে রাখা।
২। দুই হাত রানের উপরে রাখা।
৩। তাশাহুদের ভিতরে اشهد ان لا اله বলার পর শাহাদত আঙ্গুল ওঠানো এবং الا الله এর শুরুতে নামানো।
৪। শেষ বৈঠকে দুরুদ শরীফ পড়া।
৫। দুরুদ শরীফের পরে দোয়ায়ে মাছুরা পড়া।
৬। দুই দিকে সালাম ফিরানো
৭। সাাম ডান দিক থেকে শরু করা।
৮। ইমাম; মুকতাদী, ফিরিশতা এবং নেককার জ্বিনের নিয়্যত করা।
৯। মুকতাদী ইমাম, ফিরিশতা, নেককার জ্বিন এবং ডান-বামের মুকতাদীদের নিয়্যত করা।
১০। মুনফারেদ শুধু ফিরিশতার নিয়্যত করবে।
১১। মুকতাদী ইমামের সাথে সাথে সালাম ফিরাবে।
১২। দ্বিতীয় সালামের আওয়াজ প্রথম সালামের আওয়াজের চেয়ে আস্তে করা।
১৩। রুকুর মধ্যে আঙ্গুল খোলা থাকবে এবং
১৪। সিজদার মধ্যে মিলানো থাকবে।
সহজে কুরআন হিফয করার বিশেষ আমল:
একবার হযরত আলী (রাঃ) নবীজীর দরবারে এসে আরয করলেন ইয়া রাসূলুাল্লাহ! আমার মাত-পিতা আপনার প্রতি কুরবান হোক। আমি কুরআনের যতটুকু পড়ি তা মনে থাকে না, ভুলে যাই। উত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন।
হে আলী! আমি তোমাকে এমন একটি আমল শিক্ষা দিব যা আমল করলে তুমি যাই পাঠ কর তা ভুলবে না,
সব তোমার হৃদয়পটে অংকিত হয়ে থাকবে। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম ইরশাদ করেন।
বৃহঃবার দিবাগত রাত্রে শেষাংশে উঠে চার রাকাত নামায পড়বে। শেষ রাত্রে দোয়া কবুল হওয়ার সময়।
শেষ রাত্রে না উঠতে পারলে প্রথমাংশে পড়লেও হবে। চার রাকাত নামাযের প্রথম
রাকাতে সুরা ইয়াসিন পড়বে, দ্বিতীয় রাকাতে সুরা দুখান পড়বে, তৃতীয় রাকাতে সুরা আলীফ লাম মীম সিজদাহ পড়বে।
আর চতুর্থ রাকাতে সুরা মুলক পড়বে।
নামাযান্তে দীর্ঘক্ষন আল্লাহ তা’য়ালার হামদ ও ছানা পাঠ করব্ েরাসুলের প্রতি দুরুদ ও সালাম পাঠ করবে,
দু’য়ার মধ্যে সমগ্র মুসলিম জাতিকে শামিল করব্ েআর নিজের অতীত আত্মীয়ের জন্য দু’য়া করবে।
এর পর নিম্মোক্ত দু’য়া পাঠ করবে।
হযরত আী (রাঃ) কে শিখানো দু’আ
اللهم ارحمنى بترك المعاصى ابداماابقيتنى وارحمنى ان اتكلف مالا يعنينى وارزقنى حسن النظر فيما يرضيك عنى اللهم بديع السموات والارض ذاالجلال والاكرام والعزة التى لاترام اسئلك يا الله يارحمن بجلالك ونور وجهك ان تلزم قلبى حفظ كتابك كما علمتني وارزقنى ان اقرأه علي نحو الذى يرضيك عنى اللهم بديع السموت والارض ذاالجلال والاكرام والعزة التى لاترام اسئلك يا الله يا رحمن بحلالك ونور وجهك ان تنور بكتابك بصرى وان تطلق به لسانني ان تفرج به عن قلبى وان تشرح به صدرى وان تغسل به بدنى فانه لا يعيننى على الحق غيرك ولا يؤتيه الا انت ولا حول ولا قوة الا بالله العلى العظيم ড়
অতএব রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন হে আলী! এই আমল তিন, পাঁচ বা সাত জুমআ পর্যন্ত পড়বে।
ইনশা আল্লাহ দু’আ অবশ্যই কবুল হবে। তিনি আর ও বলেন ঐ জাতের শপথ! যিনি আমাকে নবী হিসাবে পাঠিয়েছেন।
যেকোন ও মুমিন বান্দাহ এ দু’য়া করবে তার দু’য়া বৃথা যাবে না।
হযরত ইবেন আব্বাস (রাঃ) বলেন পাঁচ বা সাত জুমআ যেতেই আলী (রাঃ) রাসুলের দরবারে এসে আরয করলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ!
প্রথমে আমি ৪ আয়াত পড়লে ও মনে রাখতে পারতাম না, এখন ৪০ আয়াত পড়লে ও এমন মুখস্ত হয়, যেন দেখে পড়ছি।
হাদীস শ্রবন করে বলার সময ভুলে যেতাম, এখন বলার সময় একটা অক্ষরও এদিক সে দিক হয় না।
(ফাযায়েলে কুরআন ও মুনাজাতে মাকবুল) ।