ইসমে আজম কি? ইসমে আজম এর ফযীলত কি?
উত্তরঃ ইসম অর্থ নাম, আজম অর্থ হচ্ছে মহান, শ্রেষ্ঠ।
আল্লাহ তাআ’লার অনেক নাম রয়েছে, এক হাদীসে ৯৯টি নাম বলা হলেও অন্য হাদীসে আছে এর বাইরে অন্য আরো নাম রয়েছে, যা কোন মানুষকে জানানো হয় নাই, অথবা আসলে কেউই জানেনা, এক আল্লাহ ছাড়া।
এই সবগুলো নামের মাঝে যেই নামগুলো দিয়ে আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সবচাইতে বেশী প্রকাশিত হয়, সেই নামগুলোকে ‘ইসমে আজম’ বলা হয়, অর্থ হচ্ছে আল্লাহর নাম সমূহের মাঝে শ্রেষ্ঠ নামগুলো।
বিভিন্ন হাদীসে এই নামগুলোর কিছু কিছু উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে, আমাদের দেশের প্রচলিত অযীফার বইগুলোতে অনেক বানোয়াট নাম আল্লাহর উপর করা হয়েছে।
যেইগুলো ইসমে আজম নয়। এই সমস্ত ভুল ও বিদাতপূর্ণ বই-পত্র থেকে সাবধান থাকবেন, কারণ দলীল ছাড়া কোন ইবাদত আল্লাহ তাআলা কবুল করেন না।
ইসমে আযমের ফযীলতঃ
ইসমে আযমের গুরত্ব হচ্ছে, এই নামে বা এই নামের ওসীলা দিয়ে আল্লাহকে ডাকলে বা তাঁর কাছে দুয়া করলে আল্লাহ সবচাইতে বেশি খুশি হন, এবং বান্দার দুয়া কবুল করে নেন। ইসমে আযমের উসীলা দিয়ে কোন দুয়া করলে আল্লাহ সেই দুয়া কবুল করে নেন।
নবী (সাঃ) এক ব্যক্তিকে নামাযে তাশাহুদ ও দুরুদের পরে সালাম ফিরানোর আগে (দুয়া মাসুরা পড়ার সময়) এই দুয়া পড়তে শুনলেন।
নবী (সাঃ) সাহাবাদেরকে বললেন, তোমরা কি জানো সে কিসের দ্বারা দুয়া করেছে? সাহাবারা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন।
তিনি বললেন, সেই মহান সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার প্রান, নিশ্চয়ই এই ব্যক্তি আল্লাহর নিকট তাঁর “ইসমে আযম” বা সুমহান নামের উসীলায় দুয়া করেছে। “ইসমে আযমের” উসীলায় দুয়া করলে আল্লাহ সেই দুয়া কবুল করে নেন, আর কোনো কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে তা দান করেন।
আবু দাউদ, নাসায়ী, আহমাদ, বুখারীর আল-আদাবুল মুফরাদ, ত্বাবারানী ও ইবনে মান্দাহ “আত-তাওহীদ” গ্রন্থে (৪৪/২, ৬৭/১, ৭০/১-২), একাধিক সহীহ হাদীসে এসেছে।
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﺑِﺄَﻥَّ ﻟَﻚَ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪَ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺃَﻧْﺖَ ﻭَﺣْﺪَﻙَ ﻻَ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻚَ، ﺍﻟْﻤَﻨَّﺎﻥُ، ﻳَﺎ ﺑَﺪِﻳﻊَ ﺍﻟﺴَّﻤَﻮَﺍﺕِ ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻳَﺎ ﺫَﺍ ﺍﻟْﺠَﻼَﻝِ ﻭَﺍﻟْﺈِﻛﺮَﺍﻡِ، ﻳَﺎ ﺣَﻲُّ ﻳَﺎ ﻗَﻴُّﻮﻡُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হা’মদু লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা ওয়াহ’দাকা লা-শারীকা লাকাল মান্না-ন, ইয়া বাদীআ’স্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরদ্বি, ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল-ইকরা-ম। ইয়া হা’ইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি কারণ, সকল প্রশংসা আপনার, কেবলমাত্র আপনি ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই, আপনার কোনো শরীক নেই, আপনি সীমাহীন অনুগ্রহকারী। হে আসমানসমূহ ও যমীনের অভিনব স্রষ্টা! হে মহিমাময় ও মহানুভব! হে চিরঞ্জীব, হে চিরস্থায়ী-সর্বস
ত্ত্বার ধারক!
মুনাজাতের মাঝে উপরে ইসমে আজমের এই দুয়াটা পড়ে এর পরে নিজের ইচ্ছামতো যেকোন দুয়া করতে হবে, বাংলা বা আরবীতে যা ইচ্ছা। এছাড়া সম্পূর্ণ দুয়াটা মুখস্থ না হলে সংক্ষেপে শুধু “ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল-ইকরা-ম” অথবা “ইয়া হা’ইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম” আল্লাহকে এই নামে ডেকে যেকোন দুয়া করা যাবে।
ইসমে আজমের এই দুয়াটা আপনারা হিসনুল মুসলিম বইয়ের সালাম ফেরানোর পূর্বে পঠিত দুয়া অধ্যায়ের ১০০-১০১ পৃষ্ঠায় পাবেন।