সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ইতিহাস (SEO)
এসইও এমন এক ধরনের পদ্ধতি, যার মাধ্যমে একটি ওয়েব সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা,
যাতে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের সার্চ ফলাফল ওয়েব সাইটটি অন্য সাইটকে পেছনে ফেলে সবার আগে প্রদর্শিত হতে পারে।
সার্চ ইঞ্জিনের কথা
এসইওর সঙ্গে ও তপ্রোত ভাবে জড়িত সার্চ ইঞ্জিনের বিষয়টি। সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন তথ্যকে তার নিজের ডেটাবেইসে সংরক্ষণকরে রাখে এবং পরে ব্যবহার কারীর চাহিদা অনুসারে ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করে। সার্চ ইঞ্জিন গুলোকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক একধরনের রোবট প্রোগ্রামের সাহায্যে নিরলসভাবে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য সংরক্ষণ করতে থাকে, যা ইন্ডেক্সিং নামে পরিচিত। সার্চ ইঞ্জিনগুলোর জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে গুগল। এ ছাড়া এ তালিকায় আছে ইয়াহু, মাইক্রোসফটের বিং ইত্যাদি।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে এসইও খুবই পরিচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।বিশেষকরে, আউটসোর্সিংয়েএসইওভিত্তিক নানা কাজ পাওয়া যায়, যেমন—কিওয়ার্ড রিসার্চ, ব্যাকলিংক জোগাড় করা, অনপেজ অপটিমাইজেশন, কনটেন্ট লেখা, এসইও কনসালট্যান্সি ইত্যাদি।
এসইও এমন এক বিশেষধরনের পদ্ধতি, যার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করেতোলে।
পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিনবান্ধব করে, যাতে নির্দিষ্ট বিষয়ের অনুসন্ধান ওয়েবসাইটটি সবার শীর্ষেপ্রদর্শিত হতে পারে।
এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, তথ্য খোঁজার ফলাফলে প্রথম পৃষ্ঠায় ১০টি ওয়েবসাইটের মধ্যে নিজেদের ওয়েবসাইটকে নিয়ে আসা।
প্রথম ১০-এ থাকার মানে ওয়েব সাইটে বেশিসংখ্যক ব্যবহারকারী যাওয়া। অপটিমাইজেশনের সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত।
যাঁরা আউটসোর্সিংয়ের কাজে জড়িত, তাঁরা এসইও শব্দটার সঙ্গে বেশ পরিচিত।বিভিন্ন আউটসোর্সিং বাজারে (মার্কেটপ্লেস) এ ধরনের কাজ পাওয়া যায়।এসইও একটি বিশাল ক্ষেত্র, এরসঙ্গে অনেক ধরনের বিষয় জড়িত।এককথায়, সাধারণত সার্চ ইঞ্জিনে যখন কেউ কিছু খোঁজেন,তখন যে ফলাফলগুলো সবচেয়ে ওপরের দিকে থাকে, সেগুলোই বেশি দেখেন।
আর সার্চইঞ্জিন গুলোও সবচেয়ে কার্যকর এবং যথাযথ ফলাফল দেখানোর চেষ্টা করে।সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হলো এমন কিছু পদ্ধতি, যা অনুসরণ করলে সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে ওপরের দিকেথাকা যায়। আলফা ডিজিটাল গ্রুপের পরিচালক ও বেসিসের ফ্রিল্যান্সার পুরস্কারপ্রাপ্ত মামুনুর রশীদ বলেন,‘অনলাইন বিপণনের ক্ষেত্রে এসইও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আর সারা বিশ্বের যত ওয়েবসাইট রয়েছে,বলতে গেলে তত এসইওর কাজও রয়েছে।
ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষে আনার পাশাপাশি শীর্ষত্ব ধরে রাখাও এসইওর কাজ।
এর যেকোনো একটি বিষয় শিখে ভালো কিছু করা সম্ভব।
যে ভাবে হয়
এসইও এসইওর সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। এ ব্যবস্থাটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে প্রথমেই সাইটের জন্য এক বা একাধিক নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড বা শব্দ গুচ্ছ বাছাই করতে হয়। কিওয়ার্ড বাছাই করার আগে সময় নিয়ে হয় গবেষণা।
এমন একটি কিওয়ার্ড বাছাই করতে হয়, যাতে এর প্রতিদ্বন্দ্বী কমথাকে। সে ক্ষেত্রে কিওয়ার্ডের সঙ্গে আরও কয়েকটি শব্দ যদি যোগ করা যায়, তাহলে দেখা যাবে প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়েব সাইটের সংখ্যা কমে আসবে। কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণা করা যায় গুগল অ্যাডওয়ার্ডের কিওয়ার্ড টুলের ( https://adwords.google.co.uk/KeywordPlanner ) মাধ্যমে। এছাড়া রয়েছে সার্চ ইঞ্জিন-সহায়ক ইউনিভার্স রিসোর্স লোকেটর (ইউআরএল)। অপটিমাইজেশনেরআরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সার্চ ইঞ্জিন-সহায়ক ইউআরএল। সহজ ইউআরএলের ক্ষেত্রে ইউজারের যেমন মনে থাকে,তেমনি সার্চ ইঞ্জিনও এটা পছন্দ করে। পেজ র্যাংকিং এসইওর সঙ্গে জড়িতআরেকটি বিষয়। পেজ র্যাংক বাড়ানোর জন্য মূল শক্তি ব্যাকলিংক ব্যাকলিংকের জন্য অনেকসাইট আছে, সেগুলোতে নিয়মিত ব্যাকলিংক করতে হবে। বিভিন্ন ফোরামে নিয়মিত লেখা প্রকাশ,বিভিন্ন লেখায় মন্তব্য করতে হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ওয়েব ডিরেক্টরি রয়েছে, যেখানে বিনা মূল্যে নিজের সাইটের তথ্য ও লিংক দেওয়া যায়, অন্যের ব্লগে মন্তব্য করা ইত্যাদি।এটি একটি চলমানপ্রক্রিয়া। রয়েছে ক্রাউলার ব্যবস্থা।এটি হচ্ছে একধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা স্বয়ংক্রিয় ভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে এবং নতুন তথ্য তার ডেটাবেইসে সংরক্ষণ করে। প্রোগ্রামকে প্রায় সময় ইন্ডেক্সার বা রোবট নামে ডাকা হয়। গুগলের ক্রাউলারটি ‘গুগলবট’ পরিচিত।গুগল বট নিরব চ্ছিন্ন ভাবে ইন্টারনেটে বিচরণ বেড়ায়, যখনই কোনো সাইটে তথ্য পায়, তা যোগ করে দেয়।এ ছাড়া ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ লিংকবিন্যাস একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত করে দিলে ভালো হয়।বিভিন্ন সামাজিক সাইট ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদিতে নিজের লেখা বা কমেন্টে সাইটের প্রচার করাওএসইওর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রয়োজন হয় সোশ্যাল বুকমার্ক ব্যবহার করা, ওয়েব ডিরেক্টরিতে নিজেরসাইটের বর্ণনা জমা দেওয়া, নিজেদের পরিচিত কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে লিংক আদান-প্রদান করাইত্যাদি।
আয় করা যায়
এসইওর মাধ্যমে আয়ের নানা ধরনের উপায় রয়েছে। নিজের সাইটের জন্য এসইও করলে এরমাধ্যমে সাইটে অধিকসংখ্যক ভিজিটর আসবে, যাতে ওই সাইটটি থেকে যেকোনো ধরনের সার্ভিসবা পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
এ ছাড়া সাইটে বিজ্ঞাপন থেকেও আয় করা সম্ভব। ইন্টারনেটেবিজ্ঞাপন থেকে আয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয়। নিজেরসাইটের মধ্যে গুগল অ্যাডসেন্সেরকোডযোগ করলে এটি ওয়েবসাইটের তথ্যের সঙ্গে সামঞ্জ সপূর্ণ বিজ্ঞাপন দেখায়। সেই বিজ্ঞাপনে কোনো ভিজিটর ক্লিক করলে সাইটটির মালিক একটি নির্দিষ্টপরিমাণ অর্থ পেয়ে থাকেন।
পরে গুগল থেকে চেকের মাধ্যমে সেই অর্থ তার কাছে পাঠানো হয়।বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতেও এসইওভিত্তিক নানা কাজ পাওয়া যায়।কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে কিওয়ার্ড রিসার্চ, ব্যাকলিংক জোগাড় করা, অনপেজ অপটিমাইজেশন,কন্টেন্ট লেখা, এসইও কনসালট্যান্ট ইত্যাদি। এসইও শেখার জন্য ইন্টারনেটে ইংরেজিতে অসংখ্যওয়েবসাইট রয়েছে।
বাংলায়ও অনেকেই বিভিন্ন ব্লগ ও ফোরামে এসইওর নানা বিষয় নিয়েলিখছেন।
এসইও বিষয়ে পারদর্শী বেসিসের ফ্রিল্যান্সার পুরস্কারপ্রাপ্ত আল আমিন চৌধুরী বলেন, এসইওরনানা ধরনের ক্ষেত্র রয়েছে।
এর মধ্যে যেকোনো একটি ক্ষেত্র শিখেই আয় করা সম্ভব। ই-কমার্সসাইটের পাশাপাশি যেসব সাইটে আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাওয়া যায়, সেসব সাইটেও এসইওরঅনেক কাজ পাওয়া যায়।