সফটওয়্যার পাইরেসি কি জায়েজ? Software Piracy । দেশে অ্যাডোবি ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, মাইক্রোসফট অফিস ইত্যাদির মত জনপ্রিয় পাইরেটেড কপি ব্যবহার করা হয়- ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে অফিস-আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত। এসব সফটওয়্যারের বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে অনেক দাম পড়ে যায় যা অনেকেরই সাধ্যাতীত যদি বৈধভাবে লাইসেন্স কিনে ব্যবহার করতে চায়।
Creative Cloud Plans & Pricing
এসব সফটওয়্যার দিয়ে যত ভালভাবে কাজ করা যায়, এর বিকল্প যেগুলো বিনামূল্যে করে ব্যবহার করা যায়, সেগুলো দিয়ে ততটা ভালভাবে বা সুন্দরভাবে কাজ করা যায় না। আমি এ ব্যাপারে কিছুটা ঘাটাঘাটি করে দেখেছি। আমার অস্বস্তির জায়গা হচ্ছে এই যে দামী সফটওয়্যারগুলো চোরাইভাবে করে ব্যবহার করা হচ্ছে, এতে কি আমরা গুনাহগার হচ্ছি না? আর ব্যবহার না করেও উপায় থাকছে না কারণ ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, মাইক্রোসফট অফিসের প্রচুর কাজ হয় প্রতিদিন। তাহলে উপায় কি?
প্রিয় দীনি ভাই, প্রচলিত সফটওয়্যার-পাইরেসি তথা অনুমতি ছাড়া করার সাধারণতঃ তিনটি রূপ রয়েছে । যথা-
১- ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পাইরেসি তথা সফটওয়্যার বিক্রয় ও পরিবেশন করে ব্যবসায়িকলাভের উদ্দেশ্যে পাইরেসি। এটা নাজায়েয। কেননা, এর দ্বারা নির্মাতা বা আবিস্কারকের লাভের অধিকারকে হরণ করা হয়। আর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, لا ضرر ولا ضرار ‘ক্ষতি ও ক্ষতি সাধনের কোন অনুমতি নেই।’ (সুনানে দারাকুতনী ৩০৭৯)
২- ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে পাইরেসি তথা সফটওয়্যারটি নিজে ব্যবহার করা কিংবা বিক্রয় বা পরিবেশন না করে নিজেদের ব্যবস্যায়িক বা আর্থিক কাজে লাগানো। এ প্রকারের পাইরেসির ক্ষেত্রে যদি কপিরাইট অধিকারীর মৌন সম্মতি থাকে, তাহলে তা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে মৌন সম্মতির পাশাপাশি যদি জেনুইনটি কেনার মোটেও সামর্থ্য না থাকে তাহলে মুফতিগণ এর ব্যবহার জায়েয বলে থাকেন। (ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ fatwa ID : 903-917/N=8/1435-U)
আর অ্যাডোবি ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, মাইক্রোসফট , ফ্লাশ বিল্ডার, ফায়ারওয়ার্কস-সহ কিছু সফটওয়্যার এমন আছে, যেগুলোর ক্ষেত্রে কপিরাইট অধিকারীর মৌন সম্মতি পাওয়া যায়; অর্থাৎ, তারা এগুলো পাইরেসি হতে দেখেও এর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় না মানে এক্ষেত্রে তাদের মৌন সমর্থন থাকে। তারা জানে, নিরাপত্তা, প্রাইভেসি ও ব্যবহারের যে সুবিধা জেনুইন প্রোডাক্টসে পাওয়া যায়, তা পাইরেটেড কপিগুলোতে পাওয়া যায় না। যার কারণে কর্পোরেটরা সাধারণত তাদের জেনুইন প্রোডাক্টস কিনতে বাধ্য থাকে। এতেই তাদের মুনাফা যা হওয়ার হয়ে যায়। এজন্য ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য পাইরেসির ক্ষেত্রে তাদের একপ্রকার মৌন সমর্থন থাকে। (https://www.microsoft.com/en-us/legal/পাইরেসিt) সুতরাং এগুলোর ব্যবহার -বিশেষ করে জেনুইনটি কেনার মোটেও সামর্থ্য না থাকলে- নাজায়েয হবে না। (দরসুল ফিকহ, দারুল উলুম হাটহাজারী ২/৩৮৪, ৩৮৫)
৩- ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়; বরং সর্বসাধারণের নাগালে রাখার জন্য কপিরাইটেড সফটওয়্যার ক্র্যাক করে ফ্রী বা ওপেনসোর্স করে রাখা। যদি এ ধরণের পাইরেসি দ্বারা সফটওয়্যার কোম্পানির বড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে জায়েয হবে না। তবে যদি কোন ক্ষেত্রে এমন হয় যে, কোম্পানি সফটওয়্যার বিক্রয় করে উপযুক্ত লাভ অর্জন করে নিয়েছে। এখন ক্র্যাক করার প্রতি কোম্পানির মৌন সমর্থন রয়েছে বা এর দ্বারা কোম্পানির কোন ক্ষতি হবে না, তাহলে এ ধরণের পাইরেসিও জায়েয হবে। (প্রাগুক্ত)والله اعلم بالصوابউত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী
সফটওয়্যার পাইরেসি হলো সফটওয়্যার সংযোগগুলির ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে অননুমোদিত ও বন্ধ পর্যাপ্ত ধারণা বা রেট না প্রদান করে বা সফটওয়্যার লাইসেন্সের অধীনে না আসে অথবা সফটওয়্যারের বৈধ মালিকানা অধিকার ভঙ্গ করে সফটওয়্যার ব্যবহার করা যাতে সফটওয়্যার নির্মাতা বা লাইসেন্সদাতা থেকে অননুমোদিত অর্থ প্রাপ্ত করা হয়।
সফটওয়্যার পাইরেসির মাধ্যমে ব্যবহৃত সফটওয়্যারের কপি বিতরণ করা হতে পারে অথবা সফটওয়্যার কোড বা ইন্টেলেক্চুয়াল প্রপার্টি নিয়ে বেইসিক আইপি অধিকারের ভঙ্গ করা হতে পারে। এটি সম্পাদকি বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য সাধারণভাবে বেইসিক লাইসেন্স অনুমোদন না প্রাপ্ত করা হলে সফটওয়্যার পাইরেসির হিসেবে গণ্য হতে পারে।
সফটওয়্যার পাইরেসি সাধারণভাবে সফটওয়্যার নির্মাতাদের অবৈধ অর্থ নিতে সহায়ক হয় এবং এটি সফটওয়্যার উন্নত করার জন্য উদ্দেশ্যে বাধা তৈরি করতে পারে। এটি সফটওয়্যার উন্নত ও নতুন সফটওয়্যারের নির্মাণের মধ্যে নিমিত্ত হতে পারে, কারণ লাইসেন্স নির্ধারণ না করে সফটওয়্যার নির্মাতাদের মধ্যে আরও অধিক প্রতিস্থাপনের সুযোগ দেয়।
সফটওয়্যার পাইরেসি কানুনি সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্পন্ন করতে পারে এবং সাংখ্যিক দেশে সফটওয়্যার পাইরেসি কানুন শাস্তিদান এবং দণ্ডের কার্যকর প্রয়োগ করা হয়। তবে, প্রাপ্ত শাস্তিদানের ধরন এবং দণ্ড প্রাপ্ত করা সাধারণভাবে একটি দেশ থেকে অন্য দেশে ভিন্ন হতে পারে। তাই, সফটওয়্যার পাইরেসি
থেকে বাচার জন্য সঠিক লাইসেন্স অনুমোদন প্রাপ্ত করাটি শুরু করা হলে গুরুত্বপূর্ণ।