সালাত সালাত নামাজ
- তুমি ধনী সালাত পড়,
- তুমি গরীব তবুও সালাত পড়,
- তুমি পুরুষ সালাত পড়,
- তুমি নারী তবুও সালাত পড়,
- তুমি সুস্থ সালাত পড়,
- তুমি অসুস্থ তবুও সালাত পড়,
- তুমি মুকীম সালাত পড়,
- তুমি জিহাদের ময়দানে তবুও সালাত পড়,
- তুমি মোসাফির তবুও সালাত পড়,
- তুমি দাঁড়াতে পার না? বসে পড়,
- তুমি বসতে পার না? শুয়ে পড়,
- তুমি বেকার তবে সালাত পড়,
- তুমি খুব ব্যস্ত তবুও সালাত পড়,
- তুমি যানবাহন থেকে নামতে পেরেছ? তাহলে সালাত পড়,
- তুমার যানবাহন থামছে না তবুও সালাত পড়,
- তুকি সালাত শিখতে পার নাই? তবুও সালাত পড় যা তুমি যান তা দ্বারা আর শিখতে থাকো,
#কারন __________________
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা. এর সাক্ষ্য দেয়ার পর একজন মুসলমানের ওপর গুরুত্বপূর্ণ ও আবশ্যকীয় কর্তব্য হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত। ওই সালাত মুমিন বান্দা ও কুফুর শিরিকের মাঝে পার্থক্যকারী। ইসলাম ও কুফুরের মাঝে পার্র্থক্যকারী।
যার ব্যাপারে কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম জিজ্ঞাসা করা হবে। নামাজের জন্য নবীজি সা. জীবনের অন্তিম সময়ে অসিয়ত করে গেছেন।
কোরআন শরিফে নামাজের পাবন্দি ও যতœবান ব্যক্তিদের জন্য অনেক ফজিলত, সুসংবাদ উল্লেখ করা হয়েছে।
যা একজন মুসলমানের জন্য আমল করার প্রেরণা স্বরূপ। সুতরাং কোরআন ও হাদিসের ভাষায় নামাজের কিছু ফজিলত সম্পর্কিত সুসংবাদ তুলে ধরছি। আশা করি এর মাধ্যমে সবার মাঝে নামাজের প্রতি পাবন্দি ও আগ্রহ তৈরি হবে।
১. সকল আমলের মধ্যে সর্বোত্তম আমল সালাত। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন, আমি একবার রাসুল সা. কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তখন তিনি বললেন, সময়মত নামাজ আদায় করা। (বুখারি ও মুসলিম)
২. সালাত বান্দা ও প্রভুর মাঝে বন্ধন ও সম্পর্ক স্বরূপ। রাসুল সা. ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন নামাজে দাঁড়ায়; সে তখন তার প্রভুর সঙ্গে চুপিসারে কথা বলতে থাকে। (বুখারি)
৩. সালাত দ্বীনের খুঁটি। রাসুল সা. ইরশাদ করেন, সকল বিষয়ের মূল হলো ইসলাম। ইসলামের খুঁটি হলো নামাজ। আর তার সফলতার চূড়া হলো জিহাদ। (তিরমিজি)
৪. সালাত নূর স্বরূপ। রাসুল সা. ইরশাদ করেন সালাত হলো নূর। (মুসলিম)
৫. সালাত মুনাফেকি থেকে মুক্তির উপায়। রাসুল সা. বলেন, মুনাফিকদের উপর ফজর ও ইশার সালাত অনেক কষ্টকর হয়ে থাকে। অথচ যদি তারা জানতো যে এর (ফজর ও ইশা) মাঝে কী পরিমাণ (সওয়াব ও প্রতিদান) রয়েছে তাহলে তারা হাটুতে ভর করে হলেও আসতো। (বুখারি ও মুসলিম)
৬. সালাত জাহান্নাম থেক নিরাপত্তা ও মুক্তির মাধ্যম। রাসুল সা. ইরশাদ করেন, ওই ব্যক্তি কখনোই জাহান্নামে যাবে না যে সূর্যোদয় এর পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বের সালাত আদায় করে। অর্থাৎ ফরজ ও আসর আদায় করে। (মুসলিম)
৭. সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। রাসুল সা. কে ইরশাদ করে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আপনার নিকট যে কিতাব প্রেরণ করা হয়েছে আপনি তা পাঠ করুন ও সালাত কায়েম করুন। নিশ্চই সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।
৮. সালাত গুরুত্বপূর্ণ কাজসমূহে সাহায্যকারী। তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।
৯. জামাতের সাথে সালাত আদায় করা একাকি সালাত আদায় করা থেকে উত্তম। রাসুল সা. ইরশাদ করেন, জামাতের সাথে সালাত আদায় করা একাকি নামাজ আদায় করা থেকে উত্তম। (বুখারি ও মুসলিম)
১০. নামাজি ব্যক্তির জন্য ফেরেশতারা রহমত ও মাগফিরাত কামনা করে। রাসুল সা. বলেন, যতক্ষণ তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি তার নামাজের স্থানে বসে থাকে ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করতে থাকে (যতক্ষণ না তার ওজু ভাঙে)। তারা বলতে থাকে হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! তার উপর রহম করুন। (বুখারি ও মুসলিম)
১১. গুনাহ মাফের সুসংবাদ। রাসুল সা. বলেন, যে ব্যক্তি নমাজের জন্য অজু করে এবং অজু উত্তমরূপে পূর্ণ করে, অতঃপর ফরজ নামাজের উদ্দেশ্যে বের হয় এবং সালাত আদায় করে জামাতের সাথে, আল্লাহ তার সকল গুনাহ মাফ করে দেন। (মুসলিম)
১২. শরীর গুনাহ থেকে পাক-সাফ হয়ে যায়। রাসুল সা. বলেন তোমরা কি মনে করো যে, তোমাদের কারও দরজার সামনে একটি নদী থাকে, যাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কি কোনো প্রকার ময়লা অবশিষ্ট থাকবে? সাহাবিরা বললেন, না।
তার শরীরে আর কোনো ময়লাই অবশিষ্ট থাকবে না। রাসুল সা. বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের উদাহরণও এরকমই। এগুলোর বিনিময়ে আল্লাহ তার অপরাধসমূহ মুছে দেন। (বুখারি ও মুসলিম)
১৩. জান্নাতে মেহমানদারী প্রস্তুতের সুসংবাদ। রাসুল সা. বলেন যেই ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় মসজিদে গমন করে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারী প্রস্তুত করে রাখেন। তার প্রত্যেকবারের জন্য যখনই সে সকালে বা সন্ধ্যায় (মসজিদে ) গমন করে। (বুখারি ও মুসলিম)
১৪. মসজিদে অগ্রসর হওয়ার সময় একটি কদমে একটি গুনাহ মাফ করা হয় ও অপর কদমে তার মর্যাদা সমুন্নত করা হয়।
রাসুল সা. ইরশাদ করনে, যে নিজে ঘরে পবিত্রতা অর্জন করলো আল্লাহর ঘরসমূহ থেকে কোনো এক ঘরের দিকে অগ্রসর হলো (মসজিদ) যাতে করে আল্লাহর নির্ধারিত ফরজসমূহ থেকে কোনো এক ফরজ আদায় করতে পারে (সালাত) তার একটি কদমে একটি করে গুনাহ মাফ হবে।
এবং আরেক কদমে জান্নাতে পদমর্যাদা উন্নীত করা হবে। (মুসলিম)
১৫. নামাজে আগে উপস্থিত হলে মহা প্রতিদানের সুসংবাদ। রাসুল সা. বলেন, যদি লোকেরা জানতো যে আজানের মাঝে ও (জামাতের) প্রথম কাতারের মাঝে কী (সওয়াব) আছে, আর লটারি ছাড়া এটা (ভাগ) না পেত তবে তারা এর জন্য লটারি দিত। আর যদি তারা জানতো, (জামাতে) আগে উপস্থিত হওয়ার মাঝে কী ফজিলত আছে তাহলে তারা প্রতিযোগিতা করতো। (বুখারি ও মুসলিম)।