ঘরে বসে যারা অনলাইনে কাজ করেন তাদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে পেপ্যালের সার্ভিস না থাকায় পেমেন্ট রিসিভ করতে গিয়ে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড থাকলে এসব ঝামেলা থেকে অনেকটাই বাচা যায়।
শুধু যে ফ্রীলান্সার বা ঘরে বসে যারা আয় করেন তাদের ই মাস্টার কার্ডের প্রয়োজন ব্যাপারটি তাও নয়; বরং যেকোন মানুষের ক্ষেত্রেই ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা বিদেশ ভ্রমন করেন অথবা যারা দেশে বসে বিদেশ থেকে কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করেন তাদের জন্য আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ডের কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশ থেকে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড কার্ড পাওয়া খুবই কঠিন; এতটাই কঠিন যে অনেকেই বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন৷
আজকে আমরা দেখবো, কিভাবে সহজেই বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড পাওয়া যায়। পুরো ব্লগটি পড়ার পর আপনার কাছে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড পাওয়া খুবই সহজ হয়ে দাঁড়াবে এবং আমি পুনরায় বলছি- আপনি বাংলাদেশ থেকেই খুব সহজে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড পেতে পারেন। কিভাবে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড বাংলাদেশ থেকে পাবেন সেটি ধাপে ধাপে আমরা লেখার চেষ্টা করেছি; সেটি শুরু করার আগে চলুন জেনে নিই- মাস্টার কার্ড কি এবং কেন? মাস্টার কার্ডের সুবিধা কি? এবং মাস্টার কার্ড সম্পর্কে আরও বিস্তারিত কিছু তথ্য যেগুলো মাস্টার কার্ড পেতে আপনাকে সাহায্য করবে।
মাস্টার কার্ড কি এবং মাস্টার কার্ড এর ব্যবহার?
মাস্টার কার্ড হলো আর্থিক লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত বিশেষ ধরনের কার্ড যেটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশে ব্যাংকের যে এটিএম কার্ডগুলো পাওয়া যায়; মাস্টার কার্ডও দেখতে হুবুহু একই রকম তবে এটিএম কার্ড এবং মাস্টার কার্ডের মধ্যে তফাৎ আছে৷ ব্যাপারটি খোলাসা করার চেষ্টা করছি-
ধরুণ, আপনার এটিএম কার্ডে কিছু টাকা জমা আছে। সেই টাকা আপনি বাংলাদেশের যেকোন যায়গায় এটিএম বুথ থেকে উত্তোলন করতে পারবেন। এবার আপনি ঐ এটিএম কার্ডটি নিয়ে যদি আমেরিকায় যান; সেখানের এটিএম বুথ থেকে ঐ এটিএম কার্ড দিয়ে আপনি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না। কেন সে কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না তার দুটি কারণ হলো-
- আপনার এটিএম কার্ডটি যে ব্যাংকের সেই ব্যাংকটি আমেরিকাতে নেই। বাংলাদেশে যে ব্যাংক আছে সেগুলোর কোন শাখা ই অন্যকোন দেশে নাই। অন্যকোন দেশের ব্যাংকের শাখাও বাংলাদেশে নাই। ডাচ বাংলা ব্যাংকের নাম শুনে মনে হতে পারে যে; নেদারল্যান্ডসের কোন ব্যাংকের শাখা বোধহয় এটি কিন্তু এই ধারণা সত্য নয়। ডিবিবিএল ব্যাংকটি স্বতন্ত্র এবং নেদারল্যান্ডসের এফএমও ব্যাংকের অর্থায়নে এটি তৈরি করা হয়েছে।
- আমেরিকার এটিএম বুথগুলোতে “টাকা” থাকে না; সেদেশের বুথগুলোতে “ডলার” থাকে। আপনার কার্ডে টাকা জমা থাকায় আমেরিকার কোন এটিএম বুথ আপনার এটিএম কার্ডটি রিড করবে না। একই অবস্থা হবে যদি আমেরিকান কোন লোক বাংলাদেশে এসে এটিএম বুথে গিয়ে ডলার তুলতে যায়। বাংলাদেশের এটিএম বুথে টাকা থাকে কিন্তু ডলার থাকেনা।
উপরোক্ত দুটি সমস্যা সমাধানের জন্যই ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড বানানো হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে যেকোন দেশে গিয়ে আপনি সেদেশের কারেন্সি উত্তোলন করতে পারবেন। ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ডের স্বার্থকতা এখানেই। যারা ঘরে বসে আয় করেন অর্থাৎ ফ্রীলান্সাররা তাদের ক্ষেত্রেও একই সমস্যার সমাধান করে মাস্টার কার্ড। বিদেশি কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে দেওয়ার পর পেমেন্ট রিসিভ করার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি “টাকা” পরিশোধ করেনা বরং তারা “ডলার” পরিশোধ করে। আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে ডলার পরিশোধ করলে সেটি বাংলাদেশিদের জন্য ডলারকে টাকায় কনভার্ট করে দেয়। আশাকরি, উপরের আলোচনা থেকে এটা বুঝেছেন যে- ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড কি? এবং কেন এই মাস্টার কার্ড ব্যাবহার করা হয়? এরপরও যদি মনে হয় যে, ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড দিয়ে কিভাবে অর্থ লেনদেন করে তবে আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করতে পারেন।
ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ডের প্রকারভেদ
বিভিন্ন রকমের ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড রয়েছে। মাস্টার কার্ডের প্রকারভেদ করা হয় সাধারণত কার্ডের সার্ভিসের উপর ভিত্তি করে। কোন কোন মাস্টার কার্ড থেকে ঋণ নেওয়া যায় আবার কোন কোন মাস্টার কার্ড থেকে ঋণ তো নেওয়া যায় ই না বরং অগ্রীম অর্থ দিতে হয়। সবগুলো সেবামূলক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে মাস্টার কার্ডকে নিম্নোক্তভাবে প্রকারভেদ করা যায়-
- প্রিপেইড মাস্টার কার্ড: এই ধরনের মাস্টার কার্ডগুলো সাধারণত প্রাথমিক সেবামূলক কার্ড হিসেবে বিবেচিত। এই প্রকারের মাস্টার কার্ডে আগে টাকা ডিপোজিট করে রাখতে হয়। ডিপোজিটেড মানি ছাড়া এই কার্ড অচল। এই ধরনের মাস্টার কার্ডগুলো সাধারণত বাংলাদেশের প্রিপেইড সিমকার্ডের মতো; আগে টাকা কাটে তারপর কথা বলার সুযোগ দেয়। প্রিপেইড মাস্টার কার্ডে আপনি সকল লেনদেন করতে পারবেন।
- ক্রেডিট মাস্টার কার্ড: এই প্রকারের মাস্টার কার্ডগুলো হলো মাস্টার কার্ডেরর মধ্যে সর্বোচ্চ ধরনের। এই ধরনের কার্ডে যথেষ্ট অর্থ না থাকলেও কেনাকাটা করতে পারবেন। ক্রেডিট মাস্টার কার্ড দিয়ে আপনি যেকোন পরিমান অর্থ লোন নিতে পারবেন এবং যেকোন পরিমাণ অর্থ দিয়ে বিল পরিশোধ করতে পারবেন তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্টার কার্ডের সাথে আপনার লেনদেন বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে। যার লেনদেন যত বেশি তার লোনের পরিমাণ ততবেশি হবে।
- ডেবিট মাস্টার কার্ড: এই ধরনের মাস্টার কার্ডগুলোও সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড মাস্টার কার্ডের অন্তর্ভুক্ত তবে ক্রেডিট মাস্টার কার্ড দিয়ে আপনি যেমন যত খুশি তত লোন নিতে বা বিল পরিশোধ করতে পারেন; ডেবিট কার্ড দিয়ে তা পারবেন না। ডেবিট মাস্টারকার্ড সাধারণত বাংলাদেশের পোস্টপেইড সিমকার্ডের মতো; একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এক মাসে অগ্রীম খরচ করতে পারবেন। ডেবিট মাস্টার কার্ড কোন রকম লোন দেয়না কিন্তু কেনাকাটায় কিছু পরিমাণ অর্থ অগ্রীম পরিশোধ করা যায়।
এছাড়াও মাস্টার কার্ডের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার মাস্টার কার্ড আছে। কিছু মাস্টার কার্ড আছে যেগুলো ব্যাংক তাদের কাস্টমারদের দিয়ে থাকে। আবার বর্তমানে অনলাইন পরিধি বাড়ার কারণে ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ডও বের করেছে অনেক আর্থিক কোম্পানি। আমরা ধীরে ধীরে এই ব্লগেই সব কিছু জানার চেষ্টা করবো। ক্লান্ত না হয়ে “মাস্টার কার্ড কি? অনলাইনে কিভাবে মাস্টার কার্ড পাওয়া যায় জেনে নিন ধাপে ধাপে” ব্লগটি পড়তে থাকুন।
বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড সুবিধা
বাংলাদেশে দুই ধরনের মাস্টার কার্ড সুবিধা চালু আছে। সরাসরি ব্যাংকের মাস্টার কার্ড এবং বিভিন্ন ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড। উভয় ধরনের মাস্টার কার্ডের ব্যাবহারকারী বাংলাদেশে ব্যাপক। ব্যাংকের মাস্টার কার্ড এবং ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ডগুলোর মধ্যে তেমন পার্থক্য না থাকলেও মাস্টার কার্ড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যাংকের মাস্টার কার্ডগুলো পেতে অনেক ধকল পোহাতে হয়। আমরা দুধরনের আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড পেতে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করবো এবং এদের সুবিধা অসুবিধা নিয়েও কথা বলবো।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো থেকে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড পেতে চাইলে করণীয়
বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি ব্যাংকই ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড দিয়ে থাকে৷ সবগুলো ব্যাংকের কার্যক্রম প্রায় একই রকম হওয়ায় মাস্টার কার্ড পেতেও প্রায় একই রকম পদ্ধতি ও ধাপ অনুসরণ করতে হয়। ব্যাংক থেকে মাস্টার কার্ড পেতে চাইলে ব্যাংকের কিছু শর্ত পূরণ করতে হয় যেমন-
- ব্যাংকের সাথে লেনদেনের পরিমাণ মাসিক ৫০ হাজার টাকার উপরে হবে।(ব্যাংকভেদে টাকার পরিমাণ আলাদা)।
- একাউন্টের বয়স কমপক্ষে ৬ মাস বা তারও বেশি (ব্যাংকভেদে আলাদা)।
- একাউন্টে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ অনেক বেশি হতে হবে।
উপরোক্ত ৩টি শর্ত পূরণ করতে পারলে ব্যাংকের যে শাখায় একাউন্ট খোলা হয়েছে সে শাখায় গিয়ে মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করার সময় টাকার পাশাপাশি আর কোন কারেন্সি ব্যবহার করবেন সেটি উল্লেখ্য করে দিতে হবে। আবেদন গ্রহণ করা হলে কিছুদিনের মধ্যেই আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড পেয়ে যাবেন। উপরের শর্তগুলো একসাথে মিলিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন; নিতান্তই কোটিপতি না হলে ব্যাংক থেকে মাস্টার কার্ড পাওয়া খুবই কঠিন এবং জটিল পদ্ধতি। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে একজন ফ্রিল্যান্সারের পক্ষে মাস্টার কার্ড পাওয়া পজিবল না; যেকারণে ব্যাংক থেকে আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড উত্তোলনের পরিবর্তে অনেকেই এর বিকল্প খোজেন। ব্যাংকের মাস্টার কার্ডের পরিবর্তে অনলাইনে খুব সহজেই মাস্টার কার্ড পাওয়া যায় যেটিকে ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড বা মাস্টার কার্ড অনলাইন বলা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড পেতে করণীয়
বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে মাস্টার কার্ড পাওয়ার উপায় খুবই সহজ। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাসায় বসে আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড অনলাইনে অর্ডার দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে ব্যাংকিং মাস্টার কার্ডের মতো কোন জটিল পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়না। অনলাইনে মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করলে কয়েকদিনের মধ্যেই কার্ডের ভার্চুয়াল কোড নাম্বার পাওয়া যায় এবং মাস্টার কার্ডের হার্ডকপি বা প্লাস্টিক কপি পেতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়। ভার্চুয়াল কোড নাম্বার দিয়ে আপনি যেকোন জায়গা থেকে কেনাকাটা করতে পারবেন। ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড বা অনলাইন মাস্টার কার্ডের সুবিধা দেয় এরকম কিছু প্রতিষ্ঠানের মাস্টার কার্ড সুবিধা হলো-
- পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড সুবিধা
- নেটেলার মাস্টার কার্ড সুবিধা
- স্ক্রিল মাস্টার কার্ড সুবিধা
- কিউকার্ড মাস্টার কার্ড সুবিধা।
উপরোক্ত মাস্টার কার্ডগুলোর মধ্যে পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড সুবিধা অনেক উন্নত এবং বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়। অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে পেপ্যাল সেবার পর পেওনিয়ার সেবাই সবচেয়ে ভালো এবং নির্ভরযোগ্য। বাকি ৩টির মাস্টার কার্ড সুবিধাও ভালো তবে সেগুলোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশে মাস্টার কার্ডের প্লাস্টিক কপি তেমন একটি এভেইলেবল নয়। এছাড়াও আরও বহু মাস্টার কার্ড প্রদান করে এমন প্রতিষ্ঠান রয়েছে; আপনি চাইলে যেকোন প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস নিতে পারেন তবে নির্ভরতা একটি বড় ফ্যাক্ট৷ আমরা পেওনিয়ার মাস্টার কার্ড কিভাবে বাংলাদেশ থেকে উত্তোলন করতে পারি সেটি ই ধাপে ধাপে আলোচনা করবো। সুতরাং ব্লগটি পড়তে থাকুন।
বাংলাদেশ থেকে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ড পাওয়ার উপায়
বাংলাদেশ থেকে ঘরে বসেই অনলাইনে মাস্টার কার্ডের আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে মাস্টার কার্ড অর্ডার করার জন্য কিছু ডকুমেন্ট আপনাকে আগেই রেডি করে রাখতে হবে। যে কেউ ই অনলাইনে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিভাবে অনলাইনে ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করবেন তার সবকিছু ডিটেইলসে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হবে। আশাকরি, ব্লগটি পড়ে শেষ করার পর কিভাবে মাস্টার কার্ড পেতে পারেন তার একটি সমুহ ধারণা চলে আসবে। এছাড়া পেওনিয়ারে কিভাবে মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করবেন তার একটি সেকুয়েল লাইভ টিউটোরিয়ালের ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত খোজ রাখুন। অতি জুরুরি হলে, আমাদের মেইল করুন কিংবা ফেসবুক পেজে ইনবক্স করুন।
ধাপ ০১: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট রেডি করুন
পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করতে গেলে কিছু ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে। ডকুমেন্টগুলো রেডি করেই তবে পেওয়নিয়ার মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। পেওনিয়ার ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ডের আবেদনের জন্য দুই ধরনের ডকুমেন্টের প্রয়োজন পড়বে। যেমন-
- ব্যাংক একাউন্টের হিসাব নম্বর: পেওনিয়ারে একাউন্ট খুলতে চাইলে বাংলাদেশের যেকোন ব্যাংকের একটি হিসাব নম্বরের প্রয়োজন পড়বে। তাই একাউন্ট খোলার জন্য আগেভাগেই একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলুন এবং সেখান থেকে হিসাব নম্বরটি সাথে রাখুন।
- ভোটার আইডি কার্ডের ফটো: একাউন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য আপনার ভোটার আইডি কার্ড বা ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট যেকোন একটির ফটো চাইবে৷ আপনি যেকোন একটির ফটো মোবাইল দিয়ে তুলে কম্পিউটারে বা ল্যাপটপে রাখতে পারেন (যে ডিভাইস দিয়ে একাউন্ট খুলবেন)।
এছাড়াও একটি ই-মেইল এবং মোবাইল নাম্বারের প্রয়োজন পড়বে। যে ইমেইল নাম্বার ব্যবহার করবেন সেটিতে লগইন করে একাউন্ট ভেরিফাই করতে হবে। সুতরাং এমন ইমেইল ব্যাবহার করুন যেটিতে আপনি লগইন করতে পারেন।
ধাপ ০২: পেওনিয়ারের ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইনআপ করুন
এবার দ্বিতীয় ধাপে আপনাকে পেওনিয়ারের ওয়েবসাইটে গিয়ে একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। একাউন্ট ক্রিয়েট করার জন্য পেওনিয়ার ওয়েবসাইট হলো- www.payoneer.com এই ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর রেজিষ্ট্রেশন নামক একটি অপশন পাবেন৷ সে অপশনে গিয়ে যাবতীয় তথ্য পূরণ করে একাউন্ট ক্রিয়েট করুন। একাউন্ট ক্রিয়েট করা হয়ে গেলে এবার একাউন্ট ভেরিফিকেশন করার জন্য পেওনিয়ার আপনার ইমেইলে একটি মেইল পাঠাবে৷ মেইলের ইনবক্সে গিয়ে তাদের পাঠানো মেইলের লিংকে ক্লিক করুন। আপনার পেওনিয়ার একাউন্ট সাইনআপ সম্পন্ন হলো। এবার আপনি যেকোন সময়, পেওনিয়ার একাউন্টে লগইন করতে পারবেন৷ প্রতিবার লগইন করার জন্য তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে ডান পাশে লগইন অপশনে ক্লিক করে ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিতে হবে৷ আপনি যদি পেওনিয়ারে একাউন্ট খুলতে না পারেন তবে নিচের লিংকটিতে গিয়ে পেওয়নিয়ার একাউন্ট খোলার ধাপগুলো দেখে নিন।
ধাপ ০৩: ডলার ডিপোজিট করুন
পেওয়নিয়ার একাউন্ট খোলা হয়ে গেলে এবার আপনার কাজ হবে আপনার একাউন্টে কিছু ডলার ডিপোজিট করা। আগে কোন ডলার ডিপোজিট করা ছাড়াও পেওনিয়ার বাংলাদেশে মাস্টারকার্ড দিতো কিন্তু অসাধু মানুষের কারণে সেটি বন্ধ করে দিয়েছে পেওনিয়ার কর্তৃপক্ষ। এখন পেওনিয়ারের মাস্টার কার্ড সেবা পেতে হলে কমপক্ষে ১০০ ডলার একাউন্টে ডিপোজিট করতে হবে৷ এই ১০০ ডলার ডিপোজিট করার জন্য আপনি দুটো পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন-
- নিজে ফ্রীলান্সার হলে ফ্রীল্যান্সিং কোন প্লাটফর্ম থেকে আয় করা ১০০ ডলার সরাসরি আপনার পেওনিয়ার একাউন্টে ডিপোজিট করতে পারেন। আপওয়ার্ক, গুগল এডসেন্স যেখান থেকে খুশি সেখান থেকেই ডিপোজিট করতে পারবেন। ডিপোজিট করা ১০০ ডলার পেওনিয়ার আপনার মাস্টারকার্ডে জমা করে দিবে; এটি মাস্টারকার্ডের চার্জ নয় বরং মিনিমাম ডিপোজিট মানি।
- নিজে ফ্রীলান্সার না হলে; ফ্রীলান্সিং বা আউটসোর্সিং এর কাজ করে এমন কারো কাছে থেকে ডিপোজিট করে নিন। আপনার পরিচিত কাউকে একাউন্টের দিয়ে সেখানে ১০০ ডলার ডিপোজিট করতে বলুন। আপনি ১০০ ডলারে যত টাকা হয় তত টাকা তাকে দিন।
পেওনিয়ার ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ডে আপনি সরাসরি ব্যাংক থেকে টাকা ডিপোজিট করতে পারবেন না৷ এক্ষেত্রে টাকা ডিপোজিট করার জন্য হয় আপনার ফ্রীলান্সিং করা ডলার ডিপোজিট করতে হবে নয়তো যে ফ্রীলান্স করে তার কাছে থেকে ডিপোজিট করে নিতে হবে।
ধাপ ০৪: মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করুন
১০০ ডলার ডিপোজিট করা হয়ে গেলে এবার আপনাকে পেওনিয়ার মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করার সুযোগ দিবে৷ আপনি মাস্টার কার্ডের জন্য যথাযথ আবেদন করুন। মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের আমাদের ওয়েবসাইটেই সেকুয়েল টিউটোরিয়াল প্রকাশ করা হবে। ওয়েবসাইট ঘেটে দেখুন- পেয়ে যাবেন। তাছাড়া আগেই বলা হয়েছে, যদি বেশি প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করুন। আবেদন করার সময় আপনার বর্তমান ঠিকানা অবশ্যই যথাযথভাবে বসান নতুবা ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন।
ধাপ ০৫: মাস্টার কার্ডটি সংগ্রহ করুন
পেওনিয়ার ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার কার্ডের জন্য আবেদন করলে মাস্টার কার্ড আপনার কাছে পৌছাতে দুই বা তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। এই দুই বা তিন সপ্তাহের মধ্যে মাস্টার কার্ডের প্রয়োজন পড়লে তাদের ভার্চুয়াল কোড ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ ১০০ ডলার ডিপোজিট করার পর আপনাকে দুটো সুবিধা দেওয়া হবে। প্রথমটি হলো- আপনি ভার্চুয়াল নাম্বারটি আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরপরই পেয়ে যাবেন। প্লাস্টিক মাস্টার কার্ড ছাড়াও সেই ভার্চুয়াল নাম্বার দিয়ে পেমেন্ট বা পেআউট করতে পারবেন। আর দ্বিতীয়টি হলো প্লাস্টিক মাস্টার কার্ড। প্লাস্টিক মাস্টার কার্ড বাংলাদেশে আপনার ঠিকানায় আসার পর সেটি পোস্ট অফিসে জমা হয়ে থাকবে। মাস্টার কার্ডের আবেদনের দুই সপ্তাহ পর নিয়মিত পোস্ট অফিসে যোগাযোগ করুন।